পিটার ব্রুক (১৯২৫-২০২২)
প্রয়াত হলেন পিটার ব্রুক। এই ইংরেজ থিয়েটার ও সিনেমা পরিচালকের বয়স হয়েছিল ৯৭। প্যারিসে তাঁর প্রয়াণের খবর রবিবার তাঁর প্রকাশকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
ব্রুকের জন্ম ১৯২৫ সালে। ১৯৫০-এর দশকের গোড়া থেকে থিয়েটারের কাজ শুরু করেন তিনি। ১৯৭০ দশক থেকে ফ্রান্স হয়ে দাঁড়ায় তাঁর প্রধান কর্মক্ষেত্র। মূলত থিয়েটার তাঁর মাধ্যম হলেও চলচ্চিত্র পরিচালনাতেও তিনি ছিলেন অনায়াস।
ব্রিটেনের রয়্যাল শেক্সপিয়ার কোম্পানির সঙ্গে তিনি মঞ্চায়িত করেছেন ‘রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট’, ‘মেজার ফর মেজার’, ‘দ্য উইন্টারস টেল’ বা ‘মারা/ সাদ’-এর মতো নাটক। শেক্সপিয়র ছাড়াও ‘ঈদিপাস’-এর মতো ধ্রুপদী নাটকের পরিচালনার জন্যও তিনি প্রশংসিত হয়েছেন। ‘দ্য বেগার্স অপেরা’, ‘কিং লিয়র’, ‘দ্য ট্র্যাজেডি অব হ্যামলেট’ তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।
ভারতের সঙ্গে ব্রুকের ছিল আত্মিক সম্পর্ক। ১৯৮৫-তে মহাকাব্য ‘মহাভারত’-এর এক ন’ঘণ্টা ব্যাপী মঞ্চ রূপান্তরণকে তিনি সম্ভব করে দেখান। পরে ১৯৮৯-এ সেটিকে চলচ্চিত্রে পরিণতি দেন ব্রুক। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অভিনেতারা এই মহাযজ্ঞে শামিল হয়েছিলেন।
থিয়েটারকে তার প্রথাসিদ্ধ চেহারা থেকে বার করে এনে ব্রুক কখনও পরিত্যক্ত বাড়ি বা কারখানার শেডকে ব্যবহার করতেন তাঁর প্রযোজনায়। ‘মহাভারত’ পরিচালনার আগে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়ে তিনি তুলে এনেছিলেন লোকশিল্পের অগণিত আঙ্গিক। যার ফলে তাঁর ‘মহাভারত’ হয়ে দাঁড়ায় এমন এক প্রযোজনা, যা আগে কখনও ভাবা যায়নি।
দীর্ঘ জীবনে বহু সম্মান পেয়েছেন ব্রুক, যার মধ্যে রয়েছে নাট্যজগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার টনি অ্যাওয়ার্ড, এমি অ্যাওয়ার্ড, ইবসেন পুরস্কার প্রভৃতি। ১৯৬৫ সালেই ব্রুককে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ‘কম্যান্ডার অব দ্য অর্ডার’ সম্মান প্রদান করা হয়। ২০২১ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করে।