বাসিন্দাদের শরণার্থী শিবিরে নিয়ে যাচ্ছে ইরাকি সেনা। ছবি: এপি।
জমি দখলে রাখতে মরিয়া আইএস। নিস্তার নেই সাধারণ মানুষেরও। ভিটেমাটি ছেড়ে পালাতে চাইলেই গুলি ছুড়ছে জঙ্গিরা। রক্তে ভাসছে ইরাকের ফালুজা শহর। আজ ইউরোপের এক প্রথম সারির মানবাধিকার সংগঠনের তরফে এমনটাই খবর মিলেছে। গত কালই ১৪ জন শহরবাসীকে মেরেছে জঙ্গিরা। প্রাণ হাতে শহর ছেড়ে পালাতে গিয়ে মরছে জঙ্গিদেরও একাংশ।
সূত্রটির দাবি, শহর জুড়ে এখন শুধুই সন্ত্রাস আর লাশের ছবি। ২০১৪-য় বাগদাদের পশ্চিমে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দূরের এই ফালুজা শহরটির দখল নেয় জঙ্গিরা। সম্প্রতি সেখানে পুনর্দখল অভিযান শুরু করেছে সরকারি বাহিনী। ফালুজাকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে সাঁড়াশি আক্রমণ চালাচ্ছে ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনী। দোসর মার্কিন সেনা-জোট। শহর তোলপাড় করে থেকে থেকেই চলছে বোমাবর্ষণ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, দশ দিনে এর জেরেই মরিয়া হয়ে উঠেছে আইএস। সেনা হামলা থেকে বাঁচতে জঙ্গিরা সাধারণ মানুষকে ঢাল বানাচ্ছে বলেও অভিযোগ। আর এই সংঘর্ষ এড়াতেই ফালুজার মানুষ শহর ছেড়ে পালাতে চাইছেন বলে দাবি ইউরোপীয় মানবাধিকার সংগঠনটির। নরওয়ের একটি শরণার্থী-সেবা সংগঠন ফালুজার কাছেই শিবির খুলে বসেছে। সংগঠনটির দাবি, এই মুহূর্তে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ আটকে ফালুজায়। যার মধ্যে হাজার দশেকের বেশি শিশুও রয়েছে। প্রাণে বাঁচতেই শহর ছেড়ে পালাতে চাইছেন তাঁরা। কিন্তু পালাতে গেলেই জুটছে গুলি। নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। জঙ্গিরা সব শহরবাসীকে ফালুজার কেন্দ্রে এনে জড়ো করতে চাইছে।
শহর লাগোয়া ইউফ্রেটিস নদীর পশ্চিম তীরে এখনও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি সরকারি বাহিনী। শহর ছেড়ে পালানোর ক্ষেত্রে আবার এই নদীপথই ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা। ফালুজার আঞ্চলিক পরিষদের তরফে জানানো হয়েছে, কাপবোর্ড, ড্রামে করে নদী পেরোচ্ছেন শহরবাসীরা। আর নরওয়ের ওই শরণার্থী-সেবা সংগঠনটির দাবি, নদী পার হওয়ার সময়ই এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে জঙ্গিরা। রক্তে ভাসছে ইউফ্রেটিস।
এতে লাভ কী? ইরাকের সেনা-প্রধান মেজর আলি হানুনের কথায়, ‘‘খুব সহজ হিসেব। জঙ্গিরা বুঝে গিয়েছে যে, সাধারণ মানুষকে আটকে রাখতে পারলেই সেনা আগ্রাসন থামানো যাবে।’’ ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদিও গত সপ্তাহে জানান, ফালুজার সাধারণ মানুষের স্বার্থেই সেনা অভিযান মাঝে মাঝে শ্লথ রাখা হচ্ছে।