পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
জঙ্গিদের অর্থসাহায্যে রাশ টানতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাতেই রেখে দিল এই সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থা এফএটিএফ। প্যারিসে আজ তাদের বৈঠকে এই প্রস্তাব নেওয়া হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আগামী শুক্রবার।
সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি আদালত লস্কর-ই-তৈবার প্রতিষ্ঠাতা ও মুম্বই হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদকে ১১ বছরের জন্য জেলে পাঠিয়েছে। পাক কূটনীতিকেরা আশা করছিলেন, এর পরে ইসলামাবাদ সম্পর্কে মনোভাব বদলাতে পারে এফএটিএফ এবং পাশ্চাত্যের দেশগুলি। এখানেই শেষ নয়, প্যারিসের বৈঠকের আগে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী হামাদ আজহার গত কাল দাবি করেন, জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকে পাকিস্তানে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকেই ভেবেছিলেন, এফএটিএফের বৈঠককে প্রভাবিত করতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দাদর কাছে খবর এসেছে, বাহাওয়ালপুরে জইশের সদর দফতরে পরিবারের সঙ্গে বহাল তবিয়তে রয়েছে মাসুদ। তার জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে মাসুদকে নিয়ে পাক মন্ত্রীর এমন বক্তব্য আজকের বৈঠকে দাগ কাটতে পারেনি। কারণ, এফএটিএফের বৈঠকে ধূসর তালিকা থেকে বেরোতে পারেনি পাকিস্তান।
ভারত বলে আসছে, লস্কর, জইশ বা হিজবুল মুজাহিদিনের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নিয়মিত ভাবে সাহায্য করে চলে ইসলামাবাদ। এই সব ক’টি সংগঠনেরই মূল নিশানায় ভারত। তবে পাকিস্তান এফএটিএফের সামনে নতুন তত্ত্ব হাজির করেছে। তাদের দাবি, সে দেশে ১৬ জন আন্তর্জাতিক জঙ্গির অস্তিত্ব ছিল। যার মধ্যে সাত জনই মৃত। বাকি নয় জনের মধ্যে সাত জন তাদের উপর চাপানো অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও সফরের বিধিনিষেধ তুলে নিতে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে আর্জি জানিয়েছে।
২১ ফেব্রুয়ারি এফএটিএফের চূড়ান্ত বৈঠকে ধূসর তালিকা থেকে বেরিয়ে সাদা তালিকায় আসার জন্য পাকিস্তানকে ৩৯টি ভোটের মধ্যে ১২টি পেতে হবে। কালো তালিকায় পৌঁছনো আটকাতে তিনটি দেশের সমর্থন পেতে হবে ইসলামাবাদকে। গত মাসে বেজিংয়ে এফএটিএফের বৈঠকে তারা মালয়েশিয়া, তুরস্ক ও চিনের সমর্থন পেয়েছিল। ২০১৯ সালের অক্টোবরে এফএটিএফের প্লেনারি বৈঠকে বলা হয়, জঙ্গিদের আর্থিক মদত আটকাতে প্রয়োজনীয় ২৭টি পদক্ষেপের মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে সাড়া দিয়েছে পাকিস্তান।