ছবি: পিটিআই।
সম্প্রতি ব্রিকসভুক্ত রাষ্ট্রগুলির শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রিতদের তালিকায় ঢোকার জন্য প্রবল চেষ্টা করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই তালিকায় আর্জেন্টিনা, আলজিরিয়া, মিশর, ইথিয়োপিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো ১৩টি দেশ যোগ দিল। বাইরেই থাকল ইসলামাবাদ।
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, পাকিস্তানকে আটকাতে সক্রিয় উদ্যোগছিল ভারতের। তাতে সাফল্য এসেছে, কারণ চিনও তার ‘সব মরসুমের বন্ধু’ পাকিস্তানের হাত ছেড়ে অন্তত একবারের জন্য হলেও ভারতের সঙ্গে সহমত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ পাক সরকার।
গত সপ্তাহে ব্রিকস বৈঠকের ঠিক আগে চিনে নিযুক্ত ভারতীয় দূত দেখা করেছিলেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে। প্রকাশ্যে বলা হয়েছিল, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য ওই বৈঠক। কিন্তু সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছিল, বৈঠকের সময়সূচি নিয়ে। সূত্রের খবর, দ্বিপাক্ষিক অন্য আলোচনার পাশাপাশি ব্রিকস-এ পাকিস্তানকে আমন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সেখানেই হয়ে যায়।
কূটনৈতিক শিবির বলছে, এমনিতেও ব্রিকস-এর আমন্ত্রণ তালিকা যার ভিত্তিতে সাজানো হয়েছিল, তার মধ্যে পড়ে না পাকিস্তান। যে দেশগুলি যোগ দিয়েছে, তাদের বাজার ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে। অন্য দিকে, পাক অর্থনীতি শ্রীলঙ্কার মতোই দেনার দায়ে ঝুঁকে রয়েছে।
পাকিস্তানকে বাদ দেওয়ার পর সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘ব্রিকস-এর মঞ্চে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক একটি উচ্চপর্যায়ের কথোপকথন আমরা নজর করেছি। তাতে অনেক উন্নয়নশীল দেশ যোগ দিয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, একটি দেশ পাকিস্তানকে ওই মঞ্চে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বাধা দিয়েছে।’ বিবৃতির নিশানা অবশ্যই ভারতের দিকে। কিন্তু জবাবে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিঝিয়াং কার্যত ভারতের পাশে থেকেই জানিয়েছেন, ‘এ ব্যাপারে যা সিদ্ধান্ত ব্রিকসভুক্ত রাষ্ট্রগুলির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে।’ এর বেশি তিনি আর কিছু বলেননি।
সূত্রের খবর, চিনও হতাশ হয়ে পড়েছে পাকিস্তানকে নিয়ে। ইমরানের বিদায়ের পর নতুন সরকার দেশের অর্থনীতির হাল ধরতে শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ। ইসলামাবাদের ব্যর্থতার ফলে বেজিং-এর স্বপ্নের প্রকল্প চিন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের কাজ ক্রমশই পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করার প্রয়োজন চিনেরও ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।