সাংবাদিক বৈঠকে ইমরান খান।
বৃহত্তম দল হিসাবে সরকার গঠনে যাওয়ার পথেই আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের কথা বললেন ইমরান খান। ইসলামাবাদে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘ভারত এক কদম এগোলে, আমরা দু’কদম এগিয়ে যাব। আমাকে বলিউডের হিন্দি ফিল্মের ভিলেনের মতো বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার সেটার অবসান ঘটাতে চাই।’’
তবে পাকিস্তান প্রসঙ্গে ভারতের নাম না করেই তিনি বলেন, ‘‘৩০ বছর ধরে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। সেনা পাঠিয়ে সেই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। আন্তর্জাতিক মহলে এই নিয়ে পাকিস্তানকেই দোষারোপ করা হয়। আমরা আমরা বন্ধুত্ব চাই। আলোচনার মাধ্যমেই কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করতে চাই।’’
দিল্লি-ইসলামাবাদ কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে ‘কাপ্তান’ ইমরান বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার অন্যতম পথ হতে পারে বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করা। ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাই নতুন সরকারের লক্ষ্য হবে।
পাকিস্তান নিয়ে তিনি বলেন, নতুন সরকার হবে সাধারণ মানুষের সরকার। শ্রমজীবী মানুষের সরকার। যুব সমাজের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন তিনি নিজে ব্যবহার করবেন না বলে জানিয়ে পিটিআই প্রধানের ঘোষণা, ওই ভবন স্কুলবাড়ি বা প্রদর্শশালা করা যেতে পারে।
দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া এবং স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ভোটে লড়েছেন ইমরান খান। প্রাথমিক লক্ষ্যে আপাতত সফল প্রাক্তন পাক ক্রিকেট অধিনায়ক। এখন ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি কতটা পূরণ করতে পারেন, তার দিকে নজর থাকবে গোটা বিশ্বের। যদিও বিরোধী শিবির থেকে রিগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর বিরুদ্ধে। বিরোধীদের অভিযোগ, রিগিংয়ে সাহায্য করেছে সেনাবাহিনীও।
সাংবাদিক বৈঠকে ইমরান খান...
যা বললেন ইমরান:
• আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা সমাধান করাই হবে আমার সরকারের লক্ষ্য।
• পাকিস্তানে বিনিয়োগের জন্য প্রবাসীদের আগ্রহী করে তুলতে হবে
• ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করবে নতুন সরকার।
• চিন থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। যেভাবে চিন ৭০ কোটি মানুষকে দারিদ্র সীমার উপরে নিয়ে এসেছে, আমরাও সেভাবে এগোতে চাই।
• তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে হবে।
• আমি নিজে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে থাকব না। এই বিশাল প্রাসাদোপম ভবন স্কুল বা প্রদর্শশালা হিসাবে ব্যবহার করা হবে।
• রাজ্যপালদের ভবনগুলিও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হবে, যাতে সরকারের আয় বাড়ে।
• আমি শপথ করছি করের অর্থ যথাযথভাবে রক্ষা করব এবং সঠিকভাবে কাজে লাগাব।
• ধনীরা কীভাবে জীবনযাপন করেন, সেটা কোনও দেশের পরিচয় নয়। গরিবদের জীবনধারাই দেশের মান নির্ধারক।
• আর্থিক ঘাটতি, ঋণ, বাণিজ্য ঘাটতি, এই সব নিয়ে পাকিস্তান জর্জরিত।
• পাকিস্তানের অনেক শিল্পপতি বা ধনকুবের বিদেশে থাকেন। সেই সব প্রবাসীরা যাতে পাকিস্তানের মাটিতেই বিনিয়োগ করেন, সেজন্য চেষ্টা করা হবে।
• এদেশে যথাযথ কর সংস্কার করা হবে। করের টাকা গরিব মানুষের জন্য উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজে ব্যয় হবে।
• এই নির্বাচনে প্রচুর মানুষ মারা গিয়েছেন। যেভাবে বালুচিস্তানের মানুষ বেরিয়েছেন, তাঁদের আমি ধন্যবাদ জানাই।