পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। ফাইল ছবি।
পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদকে মদত আর জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ এর আগে বহু বার এনেছে ভারত। এ বার প্রায় একই সুর শোনা গেল খোদ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর গলায়। গত সোমবার পেশোয়ারের এক মসজিদে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা চালায় পাক তেহরিক-ই-তালিবানের এক জঙ্গি। পুলিশ লাইনসের ভিতরে অবস্থিত ওই মসজিদে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। আহত দু’শোরও বেশি। হতাহতের বেশির ভাগই পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। কেউ পুলিশ, কেউ সেনা বা কেউ বম্ব স্কোয়াডের কর্মী। এই হামলার নিন্দা করেছে পড়শি দেশ ভারতও। বিষয়টি নিয়ে এ বার মুখ খুলেছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তাঁর বক্তব্য, তাঁদের দেশেই সন্ত্রাসবাদের বীজ বপন করা হয়েছে বহু বছর ধরে।
গত কাল পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে পেশোয়ারের হামলার প্রসঙ্গ তোলেন আসিফ। সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় তাঁকে। এক প্রথম সারির পাক দৈনিকে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি বেশি কিছু আজ বলতে চাই না। শুধু বলব, এই সন্ত্রাসবাদের বীজ আমরাই বপন করেছি।’’ এর পরেই পেশোয়ারের মসজিদ হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ভারত বা ইজ়রায়েলেও ধর্মস্থানে প্রার্থনারত কাউকে নিশানা করে না জঙ্গিরা।’’ একই সঙ্গে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়তে গোটা দেশকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদ কোনও ধর্মের বিভেদ দেখে না। মূল্যবান জীবন নিতেই সন্ত্রাসবাদকে ব্যবহার করে কিছু শ্রেণির লোক।’’
পেশোয়ারের পুলিশ প্রধান মহম্মদ এজাজ় খান জানিয়েছেন, সোমবার হামলার সময়ে অন্তত ৩০০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মী মসজিদে উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যেই ওই হামলায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনুসন্ধান চলছে মসজিদ লাগোয়া প্রতিটি বাড়িতে। প্রতিটি পরিবারকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পেশোয়ার পুলিশের সন্দেহ, সে দিনের হামলায় আত্মঘাতী ওই জঙ্গিকে পুলিস লাইনসের ভিতরেরই কেউ কেউ সাহায্য করেছিল। না হলে কড়া নিরাপত্তার ঘেরোটোপ এড়িয়ে প্রায় ১২ কেজি বিস্ফোরক নিজের শরীরে নিয়ে সে ওই মসজিদে ঢুকতেপারত না।
এরই মধ্যে, পাক তালিবান জঙ্গিরা নিশানা করেছে পাক পঞ্জাবের মিয়াওয়ালি থানা। অন্তত ২০ জন সশস্ত্র জঙ্গি মঙ্গলবার রাতে থানায় আক্রমণ চালায়। গুলির জবাব দেয় পুলিশ বাহিনীও। পাক তালিবান গোষ্ঠী এত দিন আফগানিস্তান সীমান্তে খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলে সক্রিয় ছিল। এখন তারা পঞ্জাবেও প্রভাব বাড়াচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে।