ম্যাথু ক্রেগ ব্যারেট। পাকিস্তানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কেন সেখানে গেলেন তিনি?
গুপ্তচর সন্দেহে এক মার্কিন যুবককে গ্রেফতার করল পাকিস্তান। শনিবার তাঁকে ইসলামাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে পাক গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ)। ২০১১ সালে পাকিস্তানের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সংরক্ষিত সামরিক এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ম্যাথু ক্রেগ ব্যারেট নামে ওই মার্কিন যুবককে। তাঁকে সে বার আমেরিকায় ফেরত পাঠানো হয়েছিল এবং তাঁর পাকিস্তানে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তা সত্ত্বেও ম্যাথু ফের পাকিস্তানে ঢোকায় শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
২০০৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানেই থাকতেন ম্যাথু ক্রেগ ব্যারেট। তিনি পকিস্তানেরই এক মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের দুই সন্তানও রয়েছে। কিন্তু ইসলামাবাদের ফতেহ জঙ্গ এলাকায় পাক সেনার একটি অত্যন্ত গোপন এবং সংরক্ষিত গবেষণাগার চত্বর থেকে ম্যাথু ক্রেগ ব্যারেটকে গ্রেফতার করা হয়। পাক সেনা ওই গবেষণাবাগরটির বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল। বিনা অনুমতিতে কঠোর নিরাপত্তা বলয় এড়িয়ে মার্কিন নাগরিকের সেখানে ঢুকে পড়া নিয়ে ইসলামাবাদ অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। আমেরিকার গুপ্তচর হিসেবেই ম্যাথু ক্রেগ সেখানে ঢুকেছিল বলে পাক গোয়েন্দাদের দৃঢ়মূল ধারণা। সে সময় পাকিস্তানের জেলে বন্দি থাকা অবস্থাতেই দ্য গার্ডিয়ান সংবাদপত্রের দফতরে গোপনে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছিলেম ম্যাথু। সেই চিঠিতে আত্মপক্ষ সমর্থনে নানা যুক্তি দিয়েছিলেন ম্যাথু। তাঁর বিরুদ্ধে পাক প্রশাসন যে চরবৃত্তির অভিযোগ তুলেছিল, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছিলেন ম্যাথু। পাকিস্তান ও আমেরিকার মধ্যে অনেক কূটনৈতিক টানাপড়েনের পর সে যাত্রা ম্যাথু ক্রেগ ব্যারেট পাক কারাগার থেকে মুক্তি পান। কিন্তু ইসলামাবাদ তাঁকে অবিলম্বে পাকিস্তান ছাড়া নির্দেশ দেয় এবং কালো তালিকাভুক্ত করে পাকিস্তানে ঢোকার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
আরও পড়ুন: ফের করাচিতে হিন্দু চিকিত্সক খুন
শনিবার পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের মুখপাত্র সরফরাজ হুসেন ম্যাথু ক্রেগ ব্যারেটের গ্রেফতারির খবর জানিয়ে বলেন, ‘‘তাঁকে যখন কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল, তখন নিশ্চয়ই খুব গুরুতর ব্যাপারই ঘটেছিল। কিন্তু পাকিস্তান তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করা সত্ত্বেও আলাবামার বাসিন্দা ওই বছর তেত্রিশের যুবক কী করে আমেরিকার পাক দূতাবাস থেকে ভিসা জোগাড় করলেন এবং কী করে ইসালামাবাদের বিমানবন্দরে অভিবাসন অফিসের ছাড়পত্র পেলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এফআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যেতে চান জানিয়ে ভিসা জোগাড় করেছিলেন ব্যারেট। এক মাস মেয়াদের ভিসা দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। শনিবার ইসলামাবাদের একটি গেস্ট হাউজ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। আপাতত তাঁকে তিন দিনের জন্য এফআইএ-র হেফাজতে পাঠিয়েছে পাকিস্তানের আদালত। পাক অভিবাসন দফতরের এক কর্মীকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে।