—ফাইল চিত্র।
সন্ত্রাসবাদীদের প্রশ্রয় দিলে কোনও দিন শান্তি ফিরবে না পাকিস্তানে। ভারত বা আমেরিকা নয়, পাক সুপ্রিম কোর্টের গড়ে দেওয়া এক বিচারবিভাগীয় কমিশনই এই মন্তব্য করেছে। সন্ত্রাস রোখার বিষয়ে পাক সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছে পাকিস্তানের ওই বিচারবিভাগীয় কমিশন। খবর পাক সংবাদপত্র ‘ডন’ সূত্রে। বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় কয়েক মাস আগে যে জঙ্গি হানা হয়েছিল, তার তদন্তের জন্যই এই বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠন করেছে পাক সুপ্রিম কোর্ট। কোয়েটা জঙ্গি হানার জন্য কমিশন প্রকারান্তরে পাক সরকারের নীতিকেই দায়ী করেছে।
অগস্টে কোয়েটার আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছিল ৭৪ জনের। সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেওয়ার বিপদ যে কতটা, পাকিস্তান আরও এক বার তা টের পেয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সন্ত্রাস সম্পর্কে পাক সরকারের নীতি বদলায়নি। ভারত ও আফগানিস্তানে নাশকতা চালাতে সক্রিয় যে সব জঙ্গি সংগঠন, রাষ্ট্রপুঞ্জ তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সত্ত্বেও পাকিস্তানে মাটিতে নির্ভয়ে এবং প্রকাশ্যে তারা কার্যকলাপ চালায়। পাক সুপ্রিম কোর্টের গড়ে দেওয়া তদন্ত কমিশনও এ বার তার বিরুদ্ধে মুখ খুলল। বৃহস্পতিবারই তদন্ত কমিশন সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে বলে ‘ডন’ সূত্রের জানা গিয়েছে। সেই রিপোর্টে কমিশন বলেছে, ‘‘পাকিস্তান যদি শান্তি ও সম্প্রীতির সহিষ্ণু দুর্গ হয়ে উঠতে চায়, তা হলে আইন এবং সংবিধানের পুনঃপ্রতিষ্ঠা জরুরি।’’ অ্যান্টি টেররিজম অ্যাক্ট (আটা) বা সন্ত্রাস দমন আইন পাকিস্তানে শুধু কাগজে-কলমে বর্তমান, সরকার এই আইনটিকে কঠোর ভাবে প্রয়োগ করার কোনও চেষ্টাই করে না, মন্তব্য বিচারবিভাগীয় কমিশনের। রিপোর্টে কমিশন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী চৌধুরি নিসার আলি খানের নিন্দা করেছে। গত ২১ অক্টোবর তিনি পাকিস্তানে নিষিদ্ধ তিনটি জঙ্গি সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছে কমিশন। দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রীর এই কার্যকলাপের সমালোচনা করে বিচারবিভাগীয় কমিশনের মন্তব্য, শুধু সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে নয়, রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রেও সন্ত্রাস দমন আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি। যে রাজনৈতিক নেতা সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন, তিনি যত বড় নেতাই হন, তাঁকে কাঠগড়ায় টেনে আনতেই হবে, মত কমিশনের।
সমস্ত জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক পাকিস্তানে, সুপারিশ করেছে পাক সুপ্রিম কোর্ট গঠিত কমিশনটি। কেন সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ করা হল, তাও সাধারণ মানুষকে জানিয়ে দেওয়া হোক। রিপোর্টে এমনই পরামর্শ দিয়েছে কমিশন। সরকারি কর্মী বা পদাধিকারীরা আইন মেনে না চললে তাঁদেরও যে ফল ভুগতে হবে, সরকার তা নিশ্চিত করুক। বিচারবিভাগীয় কমিশন এমনই সুপারিশ করেছে বলে ‘ডন’ সূত্রে জানা গিয়েছে।
উচিত শিক্ষা দিয়ে যাব, রাশিয়াকে হুমকি ওবামার