হাফিজ সইদ।
পাকিস্তানি রাজনীতির মূল স্রোতে গা ভাসাতে মরিয়া চেষ্টা করছে লস্কর প্রধান হাফিজ সইদ। পাক সেনা ও আইএসআইয়ের একাংশের মদতও তার পিছনে রয়েছে বলে ধারণা ভারত ও আমেরিকার। কিন্তু মার্কিন চাপের ফলে হাফিজের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতেও বাধ্য হচ্ছে পাক সরকার। আজ দেশের সব উর্দু সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকার জানিয়েছে, হাফিজের তথাকথিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে কেউ আর্থিক সাহায্য করলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
ওই বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, হাফিজ সইদের লস্কর ই তইবা, জামাত উদ দাওয়া, ফালাহ ই ইনসানিয়ত এবং মৌলানা মাসুদ আজহারের জইশ ই মহম্মদকে কোনও চাঁদা দেওয়া বেআইনি। এগুলি জঙ্গি সংগঠন। কোনও ব্যক্তি বা সংগঠন জঙ্গিদের চাঁদা দিলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি পাকিস্তানি টাকা জরিমানা হতে পারে। পাক সরকার হাফিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করছে বলেও দাবি সে দেশের সংবাদমাধ্যমের একাংশের।
এই পরিস্থিতিতে আজ ফের আমেরিকার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে হাফিজ। এক সম্মেলনে সে দাবি করেছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তান আমেরিকাকে অনেক সাহায্য করেছে। কিন্তু সে কথা আমেরিকা ভুলে গিয়েছে। এখন ওয়াশিংটন পাকিস্তানিদেরই হুমকি দিচ্ছে। আমেরিকার ‘দান’ ছা়ড়াও পাকিস্তান নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সঠিক পদক্ষেপ না করায় সম্প্রতি পাকিস্তানের বিপুল অঙ্কের আর্থিক সাহায্য বন্ধ করে দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। টুইটারে পাকিস্তানকে হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন: কিমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি ট্রাম্প
তবে পাক সরকার হাফিজকে নিয়ে কড়া মনোভাব দেখালেও মোটেই নিশ্চিন্ত নয় ওয়াশিংটন। বরং পাকিস্তানকে বাগে আনতে চিনের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবছে তারা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তানে জঙ্গিদের কার্যকলাপ সম্পর্কে আমেরিকা ও চিনের উদ্বেগ অনেকাংশেই এক। তাই ইসলামাবাদকে বাগে আনতে বেজিংয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করা যেতে পারে।
ইতিমধ্যে আজ কূটনৈতিক অস্বস্তি বেড়েছে পাকিস্তানের। জেরুসালেম বিতর্ক নিয়ে হাফিজ সইদের সঙ্গে এক মঞ্চে এসেছিলেন পাকিস্তানে নিযুক্ত প্যালেস্তাইনি রাষ্ট্রদূত ওয়ালিদ আবু আলি। ভারত কড়া প্রতিক্রিয়া জানানোর পরে তাঁকে সরিয়ে দেয় প্যালেস্তাইন। গতকাল পাকিস্তান উলেমা কাউন্সিলের নেতা মৌলানা তাহির আশরফি পাক সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, আবু আলিকে ইসলামাবাদে ফেরৎ পাঠাচ্ছে প্যালেস্তাইনি সরকার। আজ প্যালেস্তাইনি বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, এই তথ্য ভুল। আবু আলিকে ইসলামাবাদে ফেরৎ পাঠানোর পরিকল্পনা তাদের নেই।