লন্ডভন্ড ডারনা শহর। ছবি: রয়টার্স।
প্রকৃতির রোষ একের পর এক আছড়ে পড়ছে উত্তর আফ্রিকার দেশগুলিতে। গত শুক্রবার রাতে জোরালো ভূমিকম্পে ধ্বংস্তূপের চেহারা নিয়েছে মরক্কো। ৬.৮ মাত্রার সেই ভূমিকম্পে এই দেশে সোমবার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯০০ মানুষের। আহত হয়েছেন আড়াই হাজারেরও বেশি। সেই ক্ষত সারিয়ে তুলতে যখন লড়াই চালাচ্ছে উত্তর আফ্রিকার এই দেশটি, কম্পনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর আফ্রিকারই আরও একটি দেশ লিবিয়ায় তাণ্ডব চালাল বিধ্বংসী ঝড়।
রবিবার পূর্ব লিবিয়ায় আছড়ে পড়ে ঝড় ‘ড্যানিয়েল’। এই ঝড়ের জেরে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডারনা শহর। লিবিয়া সেনার মুখপাত্র আহমেদ মিসমারি জানিয়েছেন, ডারনায় বেশ কয়েকটি নদীবাঁধ রয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডবে তিনটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জলের তোড়ে ভাসিয়ে নিয়ে একেবারে সমুদ্রে নিয়ে ফেলেছে বহু বসতি। আর তার জেরেই বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ হয়েছেন হাজারো মানুষ। লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ওসামা হামাদ টেলভিশন বার্তায় জানিয়েছেন, দু’হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ৫-৬ হাজার।
গত সপ্তাহেই গ্রিসে আছড়ে পড়েছিল ‘ড্যানিয়েল’। তার পর সেই ঝড় লিবিয়ার দিকে এগোতে শুরু করে। রবিবার ভয়ঙ্কর শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়ে উপকূলীয় শহর ডারনা এবং লিবিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজির উপর। ডারনার এক বাসিন্দা আহমেদ মহম্মদ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “আমরা তখন ঘুমোচ্ছিলাম। গোটা শহর তখন ঘুমে আচ্ছন্ন। ঘুম ভাঙতেই দেখি বা়ড়ির চারপাশ দিয়ে জলের স্রোত বইছে। সে কী ভয়ঙ্কর স্রোত! সেই জল ১০ ফুট পর্যন্ত পৌঁছ গিয়েছিল। আমরা বেরোনোর চেষ্টা করেও পারিনি। শেষে বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিই।”
শুধু ডারনা বা বেনগাজি নয়, ‘ড্যানিয়েল’-এর তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে আল-বায়দা, আল-মার্জ, তোবরুক, বাতাহ-র মতো বেশ কিছু শহর। তবে এদের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ডারনা এবং বেনগাজির।