সেই করমর্দন। পানামায় সম্মেলনে বারাক ওবামা এবং রাউল কাস্ত্রো। ছবি: এএফপি।
একটি করমর্দন। তাতেই দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে বদলের ইঙ্গিত পেলেন কূটনীতিকেরা। ১৯৫৮ সালের পরে প্রথম করমর্দন করলেন কিউবা ও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। পানামায় ওই করমর্দনের পরে আজ বৈঠকও করেছেন বারাক ওবামা ও রাউল কাস্ত্রো।
কিউবায় কমিউনিস্ট বিপ্লবের পরে ১৯৬১ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে আমেরিকা। তার পরে রাউলের দাদা ও কিউবার তৎকালীন কমিউনিস্ট একনায়ক ফিদেল কাস্ত্রোকে সরানোর বহু চেষ্টা করেছে ওয়াশিংটন। সেই সঙ্গে জারি ছিল আর্থিক নিষেধাজ্ঞা। কিউবায় কমিউনিস্ট রাজত্ব টিকলেও মার্কিন নিষেধা়জ্ঞার চাপে বেহাল হয়েছে ওই দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতি। দীর্ঘদিন ধরেই কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে মার্কিন প্রশাসনকে চাপ দিচ্ছিল বিভিন্ন শিবির। ঘরের এত কাছে কিউবার মতো বাজার হাতছাড়া করতে রাজি নয় মার্কিন শিল্পমহল। কিউবা থেকে আসা শরণার্থীদের একাংশও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পক্ষে।
২০১৩ সালে নেলসন ম্যান্ডেলার স্মরণ অনুষ্ঠানে করমর্দন করেছিলেন ওবামা ও রাউল। তখনই দু’দেশের সম্পর্কে পট পরিবর্তনের ইঙ্গিত পেয়েছিলেন কূটনীতিকেরা। ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর দু’দেশ ফের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা ঘোষণা করে। তার আগে ১৮ মাস গোপনে আলোচনা চালিয়েছিলেন আমেরিকা ও কিউবার প্রতিনিধিরা। ক্যাথলিক প্রধান দক্ষিণ আমেরিকার এই কূটনৈতিক দরকষাকষিতে ভূমিকা ছিল ভ্যাটিকানেরও।
ওয়াশিংটন-হাভানা সম্পর্কের এই নতুন পর্বেরই আর এক ধাপ দেখল পানামা। আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনে দেখা হল ওবামা ও রাউলের। হল ঐতিহাসিক দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও।
তবে কূটনীতিকেরা জানাচ্ছেন, এখনও বিস্তর কাজ বাকি। কিউবার উপরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে মার্কিন কংগ্রেসকে অনুরোধ করেছেন ওবামা। কিন্তু কংগ্রেস এখনও তা অনুমোদন করেনি। কিউবাকে সন্ত্রাসে মদতদাতা রাষ্ট্রের তালিকা থেকেও এখনও সরায়নি ওয়াশিংটন। বিশেষ়জ্ঞদের মতে, সন্ত্রাসে মদতদাতা রাষ্ট্রের তালিকা থেকে কিউবাকে না সরালে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সহজ হওয়া কঠিন। ওবামা কতটা এগোতে
চান, সে দিকেই এখন তাকিয়ে কূটনৈতিক শিবির।