আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। -ফাইল ছবি।
ভবিষ্যতে কংগ্রেসের দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর পুত্র রাহুল গাঁধীর পথে কাঁটা হবেন না জেনেই মনমোহন সিংহকে প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। আত্মজীবনী ‘আ প্রমিস্ড ল্যান্ড’-এ এ কথা লিখেছেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এও লিখেছেন, মনমোহনের নির্বাচনের আরও দু’টি কারণ ছিল। তিনি শিখ এবং জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর তেমন ভিত্তি ছিল না। তবে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের পাণ্ডিত্য আর সৌজন্যবোধ যে তাঁকে চমকে দিয়েছিল, সে কথাও স্বীকার করেছেন ওবামা। লিখেছেন এমন পাণ্ডিত্য আর সৌজন্যবোধ সচরাচর দেখা যায় না।
মনমোহনকে কী চোখে দেখত ১০ নম্বর জনপথ, সম্ভবত সে কথা বোঝাতেই একটি আলাপচারিতার উল্লেখ করেছেন ওবামা। ভারত সফরে এসে সে বার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে একটি ডিনার বৈঠক করেছিলেন ওবামা। সেই বৈঠকে ছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী ও তাঁর পুত্র রাহুলও।
ওবামা লিখেছেন, ‘‘যেটুকু বুঝেছি, কথা বলার চেয়ে শ্রোতার ভূমিকায় থাকতেই বেশি পছন্দ করেন সনিয়া। মনমোহন কোনও সরকারি বিষয় নিয়ে কথা তুলতে গেলেই সনিয়াকে দেখেছি ওঁকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে। আর দেখেছি আলোচনাকে বার বার ওঁর ছেলের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন সনিয়া।’’
আরও পড়ুন: আমেরিকায় টানা ১১ দিন নতুন সংক্রমণ ১ লক্ষের উপর, আরও সঙ্কটে অর্থনীতি
আরও পড়ুন: ভাবী ভাইস প্রেসিডেন্ট কেন অন্তরালে, জল্পনা আমেরিকার রাজনৈতিক মহলে
তবে মনমোহনকেই ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারের পুরোধা বলে মেনে নিয়ে ওবামা জানিয়েছেন যতটা সম্ভব জাতপাতের রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে ভারতকে চালানোর চেষ্টা করেছিলেন মনমোহনই।
ওবামা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘মনমোহনের কার্যকালের মেয়াদ ফুরনোর পর কি ক্ষমতার ব্যাটন রাহুলের হাতে সফল ভাবে তুলে দিতে পারা গেল? তাঁর মায়ের স্বপ্ন কি সফল করে তুলতে পারলেন রাহুল? কংগ্রেস কি বিজেপি-র বিভেদকামী জাতীয়তাবাদকে রুখতে পারল?’’
হিংসা, দুর্নীতি, জাতপাতের রাজনীতি, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা কী ভাবে ভারতের মতো শক্তিশালী গণতন্ত্রের দেশে স্থায়ী ভাবে থেকে গিয়েছে তা নিয়েও গভীর বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।