এক্সপি নয়, ওয়ানাক্রাই হামলা বেশি হয়েছে উইন্ডোজ ৭-এ!

শুধু পুরনো অপারেটিং সিস্টেম নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তুলনামূলক নতুন অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারেই হানা দিয়েছে ফাইল পণবন্দি করার ভাইরাস ‘ওয়ানাক্রাই’। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, হামলার পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও বিপদ কাটেনি মোটেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০৩:০৮
Share:

শুধু পুরনো অপারেটিং সিস্টেম নয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তুলনামূলক নতুন অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারেই হানা দিয়েছে ফাইল পণবন্দি করার ভাইরাস ‘ওয়ানাক্রাই’। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, হামলার পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও বিপদ কাটেনি মোটেই। কারণ কম্পিউটার মালিকদের প্রতি হ্যাকাররা হুমকি দিয়ে রেখেছে, দাবি মতো অর্থ না দিলে শনিবার থেকে তাঁদের কম্পিউটারগুলিকে ‘খুন’ করা হবে! অর্থাৎ চিরতরে ‘লক’ করে দেওয়া হবে।

Advertisement

সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের হয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে একটি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা। ওই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, গত এক সপ্তাহে যত কম্পিউটারে ওই সাইবার-দস্যু হানা দিয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশই চলত ‘উইন্ডোজ ৭’ অপারেটিং সিস্টেমে। অথচ হামলার পর থেকে সাইবার জগতের অনেকেই বলছিলেন, ‘উইন্ডোজ এক্সপি’ (যা কিনা তুলনামূলক ভাবে পুরনো) কিংবা তার চেয়েও আগের অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারেই সাইবার হামলা বেশি হয়েছে। কিন্তু সমীক্ষায় পুরোপুরি উল্টো ছবিই উঠে এসেছে।

তবে সমীক্ষাকারী সংস্থাটি এ-ও জানিয়েছে যে বিকল হয়ে পড়া কম্পিউটারগুলিতে ‘উইন্ডোজ ৭’-এর মতো তুলনামূলক নতুন অপারেটিং সিস্টেম থাকলেও তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ‘আপডেট’ করা ছিল না।

Advertisement

গত শুক্রবার থেকে ব্রিটেন, আমেরিকা, চিন, জাপান, ভারত-সহ শ’দেড়েক দেশের প্রায় ৩ লক্ষের বেশি কম্পিউটারকে পণবন্দি করে ফেলেছে ‘ওয়ানাক্রাই’। এমন ভাইরাসের মাধ্যমে কম্পিউটারকে আটক করে হ্যাকাররা অর্থ আদায়ের ফিকিরে থাকে বলেই এগুলিকে ‘র‌্যানসমঅয়্যার’ বলা হয়। মুক্তিপণ হিসেবে কম্পিউটার পিছু ৩০০ ডলার করে চেয়েছে ওয়ানাক্রাই-এর হ্যাকারেরা। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বিটকয়েন মারফত (সাঙ্কেতিক নিরাপত্তায় মোড়া অনলাইন লেনদেন পরিষেবা। তবে এটা ভারতে নিষিদ্ধ) এখনও পর্যন্ত ৮৩ হাজার ডলার হাতিয়েছে অপরাধীরা। তবে হামলার সাত দিন পরেও পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেতে হচ্ছে সাইবার বিশেষজ্ঞদের। বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার গবেষকেরা জানাচ্ছেন, পণবন্দি হয়ে পড়া কম্পিউটারের ফাইলগুলি এখনও উদ্ধার করতে পারেননি তাঁরা। এই কাজে কে কতটা সফল হবেন তা-ও বোঝা যাচ্ছে না।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে পাক টাকা খুঁজবে এনআইএ

বিশ্ব জুড়ে এমন ভয়ঙ্কর সাইবার হামলা নিয়ে তদন্তে নেমেছে একাধিক দেশ। এর পিছনে ‘শ্যাডো ব্রোকার্স’ নামে একটি হ্যাকার গোষ্ঠীকে সন্দেহ করা হলেও কোনও অপরাধীকে এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। তবে কখনও সন্দেহের আঙুল উঠেছে উত্তর কোরিয়ার দিকে। কোনও তদন্তে আবার বেরিয়ে এসেছে, এই হামলার হাতিয়ার আমেরিকার সাইবার গোয়েন্দা সংস্থা ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি’ (এনএসএ)-র ভাঁড়ার থেকে চুরি করা হয়েছে। এতে আমেরিকার বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে রাশিয়া।

এক গবেষকের কথায়, ‘‘এই ধরনের হামলায় সাঙ্কেতিক কো়ড দিয়ে কম্পিউটারকে বন্দি করে ফেলে হ্যাকারেরা। সেই কোড ভাঙার পথ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।’’ ফলে যে সব ফাইলের ব্যাকআপ ছিল সেখান থেকে তথ্য নিয়ে উদ্ধারের কাজ চলছে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ‘ওয়ানাক্রাই’ ভাইরাস শুধু কম্পিউটারেই হামলা চালিয়েছে। এখনও কোনও নেটওয়ার্ককে কাবু করতে পারেনি।

পণবন্দির খেলায় স্বস্তি এটুকুই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement