জাহ্নবী কান্দুলা। —ফাইল চিত্র।
রাস্তা পার হতে গিয়ে পুলিশের বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারানো অন্ধ্র প্রদেশের ছাত্রী জাহ্নবী কান্দুলাকে মরণোত্তর স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেবে আমেরিকার সিয়াটলের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি। বিশ্ববিদ্যালয়টির চ্যান্সেলরের দফতর থেকে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতিতে এই খবর জানানো হয়েছে।
অন্ধ্র প্রদেশ থেকে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়তে যাওয়া জাহ্নবী এ বছর ২৩ জানুয়ারি রাস্তা পার হওয়ার সময়ে গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান। পুলিশ মামলা লঘু করে দুর্ঘটনার দায় ছাত্রীর উপরে চাপায় এবং রিপোর্ট দেয়, পুলিশের গাড়িটি নির্ধারিত ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতেই চালানো হচ্ছিল। সম্প্রতি একটি রিপোর্টে দেখা যায়, গাড়িটির চালক পুলিশ অফিসার ওয়ারলেসে অন্য এক জনের সঙ্গে কথা বলতে বলতে প্রায় ৭৪ কিলোমিটার গতিতে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। তার চেয়েও বড় কথা, পোশাকে লাগানো ভিডিয়ো ক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া কথোপকথনে মৃত ছাত্রীর প্রতি অবমাননাকর কথা বলছিলেন চালক ও অন্য এক অফিসার। অফিসার চালককে বলছিলেন, “যে ধাক্কা খেয়েছে, কোনও বিশেষ জন নয়, একেবারেই মামুলি আম আদমি। সাধারণ এক জন ছাত্রী। এত চিন্তা করার কিছু নেই। এগারো হাজার ডলারের মতো ছুড়ে দিলেই মিটে যাবে।” ভারত সরকার পুলিশের এর আচরণ নিয়ে আমেরিকা প্রশাসনের কাছে প্রতিবাদ জানায়। প্রমীলা জয়পাল এবং বিবেক কৃষ্ণমূর্তির মতো ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান এমপি-রাও পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে।
ঘটনার এত দিন পরে নর্থইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের দফতরের বিবৃতিতে মৃত জাহ্নবীকে নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে। তাঁর ‘উছলে ওঠা হাসি’ এবং রসবোধের প্রশংসা করা হয়েছে। জাহ্নবীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মীরা মিস করছেন বলেও জানানো হয়। একই সঙ্গে জানানো হয়, তাঁকে মরণোত্তর ডিগ্রিটি দেওয়া হবে। পরিবারের লোকের হাতে সেই ডিগ্রি তুলে দেওয়া হবে। জাহ্নবীর স্মরণসভা করা হবে বলেও এত দিন পরে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা করে প্রশংসা করে বলা হয়েছে, পড়াশোনায় তাঁরা বেশ এগিয়ে।