নজর: পর্দায় কিম জং উন। নেতার বক্তৃতা শুনতে পিইং ইয়ংয়ের রাস্তায় ভিড় সাধারণ মানুষের। এএফপি
বাগ্যুদ্ধ চলছেই। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে কিম জং উনের দেশকে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকী কিমের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাকে ব্যঙ্গ করে তাঁকে ‘রকেট ম্যান’ বলে উল্লেখ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ বার ট্রাম্পকে পাল্টা ‘মানসিক বিকারগ্রস্ত আর ভীমরতিগ্রস্ত বৃদ্ধ’ বললেন কিম। আগুন দিয়ে আমেরিকাকে ‘বাগে আনার’ হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থার তরফে কিমের এই বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে। ট্রাম্প আজ আবার মুখ খুলে কিমকে ‘ম্যাড ম্যান’ বলে উত্তেজনার পারদ আরও খানিকটা চড়িয়েছেন।
গত কাল নতুন করে উত্তর কোরিয়ার উপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কথা ঘোষণা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেই সঙ্গে ট্রাম্পের হুমকি, ‘‘কিমের দেশকে এর পর আরও কঠিন কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে।’’ রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বক্তৃতাতেই ট্রাম্প ইঙ্গিতটা দিয়ে রেখেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার উপর আরও কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য তিনি এখন পাশে চাইছেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। মার্কিন আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, নতুন নিষেধাজ্ঞা
বহাল হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বা বাণিজ্যিক সংস্থার কাছে দু’টো রাস্তা খোলা থাকবে। হয় আমেরিকার পাশে থাকা, না হলে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের সম্পর্ক বজায় রাখা। যে অর্থনৈতিক বলে কিম একের পর এক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আর পরমাণু পরীক্ষা করে চলেছেন, সেখানেই এখন আঘাত হানতে চাইছে ট্রাম্প প্রশাসন। চিন এই প্রস্তাবে প্রথমে রাজি না হলেও এখন আমেরিকার পাশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্টই। উত্তর কোরিয়ার দীর্ঘদিনের বন্ধু চিন। যে ক’টা হাতে গোনা দেশের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, তার মধ্যে বেজিং অন্যতম। কিন্তু সেই চিনই এখন নিজেদের কিছু ব্যঙ্ককে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন বন্ধ রাখার কথা বলেছে। নিষেধাজ্ঞার প্রশ্নে চিন-রাশিয়াকে পাশে পেয়ে তাদের ধন্যবাদও জানাতে ভোলেননি ট্রাম্প।
কিন্তু নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও কিম যে দমবার পাত্র নন, তা আজ ফের পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে উত্তর কোরিয়ার বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রী রি ইওং-হো এখন নিউ ইয়র্কে। তিনিই জানিয়েছেন, প্রশান্ত মহাসাগরে খুব শিগগির আর একটা বড়সড় হাইড্রোজেন বোমা ফাটানোর কথা ভাবছে কিম প্রশাসন। সাধারণ সভার বক্তৃতায় ট্রাম্প যা যা বলেছেন, তার মূল্য আমেরিকাকে চোকাতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন কিম। এই অবস্থায় কোরীয় উপদ্বীপে জাপানি যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে যৌথ মহড়া দিয়েছে মার্কিন রণতরী ‘রোনাল্ড রেগন’। আগামী মাসে এই মার্কিন রণতরী আলাদা করে ফের মহড়া দেবে বলে জানিয়েছে জাপানের নৌসেনা। এই পরিস্থিতিতে আজ কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছে বেজিং। এর আগেও দু’দেশের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে চিনকে। আজ চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘কোরীয় উপদ্বীপের পরিস্থিতি জটিল। দু’পক্ষকেই সংযত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা। কেউ কোনও প্ররোচনামূলক কথা বললে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।’’