উপহার: অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এস্থার দুফলোর দেওয়া ব্যাগ ও বই। শুক্রবার স্টকহলমের নোবেল সংগ্রহশালায়। নিজস্ব চিত্র
ঘানার এক অতিদরিদ্র মহিলার বানানো কয়েকটি ব্যাগ উপহার দিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। এস্থার দুফলো দিলেন ভারত থেকে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি ছোটদের বই। নোবেল সংগ্রহশালায় নোবেল বিজেতাদের এই ‘দানের’ মধ্যে দিয়েই স্টকহলমে শুরু হয়ে গেল ‘নোবেল সপ্তাহ’। আগামী মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর, স্টকহলম কনসার্ট হলে সুইডেনের রাজার উপস্থিতিতে নোবেল পদক তুলে দেওয়া হবে প্রাপকদের আগে। তার আগে-পরে সপ্তাহভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে নোবেল কমিটি। সেই অনুষ্ঠান-পর্বেরই সূচনা হল আজ।
এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারপ্রাপক ত্রয়ীদের মধ্যে অন্যতম, বঙ্গসন্তান অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় যে ব্যাগগুলি সংগ্রহশালায় দান করেছেন, সেগুলি ‘ইনোভেশনস ফর পভার্টি অ্যাকশন’ নামে একটি সংস্থার। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দরিদ্রতম মানুষদের জন্য কাজ করে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। উত্তর ঘানার এক মহিলা এই ব্যাগগুলি বানিয়েছেন। তাঁর মতো মহিলারা হাতের কাজ করে যে সামান্য টাকা পান, তাই দিয়েই তাঁরা সংসার চালান বলে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি সূত্রে জানা গিয়েছে।
অর্থনীতির আর এক নোবেলজয়ী এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কাছে ‘অভিজিতের স্ত্রী’ এস্থার দুফলো ‘প্রথম বুকস’ নামে একটি ভারতীয় প্রকাশনা সংস্থার বেশ কিছু বই উপহার দিয়েছেন সংগ্রহশালায়। বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় ছোটদের বই প্রকাশ করে এই সংস্থাটি। এর মধ্যে একটি বইয়ে স্বাক্ষর করে দিয়েছেন এস্থার। প্রথামাফিক চেয়ারেও স্বাক্ষর করেছেন নোবেলজয়ীরা। সেই চেয়ার থাকবে সংগ্রহশালায়।
আজকের অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে নোবেলজয়ীদের সঙ্গে এই মুহূর্তে মহাকাশে থাকা দুই মহাকাশচারীর কথোপকথন। নোবেল পুরস্কারপ্রাপকেরা বসে ছিলেন নোবেল সংগ্রহশালায়। আর মহাকাশচারীরা আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে। মহাকাশে হাঁটা, ডার্ক ম্যাটার, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ব্যবহারের মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। পদার্থবিজ্ঞানের তিন জনের মধ্যে দুই নোবেলজয়ী দিদিয়ে কুয়োলেজ ও মিশেল মেয়র এবং লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির আবিষ্কর্তা, রসায়নের অন্যতম নোবেলজয়ী স্ট্যানলি হুইটিংহ্যাম দুই মহাকাশচারী জেসিকা মেয়ার এবং লুকা পারমিতানোর সঙ্গে কথা বলেন। এই আলাপ-আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছেন মহাকাশচারী ক্রিস্টার ফুগলেসাং। দিন কয়েক আগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রের বাইরে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি পাল্টানোর অভিজ্ঞতা জানান জেসিকা। পারমিতানো আলোচনা করেন ২০১১ সাল থেকে মহাবিশ্বে ‘ডার্ক ম্যাটার’-এর খোঁজ সম্পর্কে।