গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ব্যাঙ্কে পড়ে কার্যত ‘পচছে’ বিপুল অঙ্কের টাকা। অথচ, নেই কোনও দাবিদার। সম্প্রতি কালো টাকা নিয়ে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে সুইৎজারল্যান্ড সরকার। আর সাড়ে তিন হাজার জনের সেই তালিকায় রয়েছেন একাধিক ভারতীয়ও।
জানা গিয়েছে, ওই তালিকায় রয়েছে অন্তত ১০ জন ভারতীয়র অ্যাকাউন্ট। কয়েক জন পাক নাগরিকের অ্যাকাউন্টও রয়েছে সুইস ব্যাঙ্কে। এ ছাড়াও অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরও অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ২০১৫ সালে ‘ডর্ম্যান্ট’ অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে কোনও লেনদেন হয় না এমন অ্যাকাউন্টগুলি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে আনে সুইৎজারল্যান্ড সরকার। যাতে ওই অ্যাকাউন্টগুলির ওয়ারিশরা উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ দিয়ে জমা থাকা টাকা দাবি করতে পারেন। কিন্তু তার পর বহু সময় কেটে গেলেও সুইস ব্যাঙ্কে জমা ওই টাকার মালিকদের কেউ দাবিই করেননি। প্রত্যেক বছরই এমন ‘অব্যবহৃত’ অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়ছে বলে সুইস সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে। এখন ওই ধরনের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজারে ঠেকেছে।
২০১৫ সালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সমস্ত অ্যাকাউন্ট মিলে সাড়ে চার কোটি সুইস ফ্রাঁ অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা জমা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে কোনও কোনও অ্যাকাউন্ট ভারতে ব্রিটিশ শাসনের শেষের দিকে খোলা হয়েছিল। কোনওটি আবার খোলা হয় ১৯৫৫ সালে। এছাড়াও ৮০টি দাবিহীন সেফটি বক্সও রয়েছে সুইস ব্যাঙ্কে।
আরও পড়ুন: সকালেই মমতাকে ফোন মোদীর, আলোচনা বুলবুল নিয়ে, দিলেন সবরকম সাহায্যের আশ্বাস
কালো টাকা নিয়ে অভিযোগের পাহাড় গোটা দুনিয়া জুড়েই। দেশের রাজনীতিতেও তা নিয়ে কম ঝড় ওঠেনি। কালো টাকা সংক্রান্ত তথ্য হাতে পেতে সুইৎজারল্যান্ড সরকারের সঙ্গে চুক্তিও করে মোদী সরকার। এর পরই কালো টাকা সংক্রান্ত প্রথম দফার তথ্য ভারতকে দেয় সুইস সরকার। আগামী ২০২০ সালে দ্বিতীয় দফায় আরও তথ্য হাতে পাবে নয়াদিল্লি। সেই তথ্য মারফত জানা গিয়েছে, লেনদেনহীন ওই অ্যাকাউন্টগুলির মধ্যে কয়েকটির দাবিদার রয়েছে কলকাতা, মুম্বই ও দেহরাদুনের মতো শহরেও। এছাড়াও কয়েকটি অ্যাকাউন্টের ওয়ারিশরা ফ্রান্স ও ব্রিটেনে রয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘কী রে, বাড়িতে বুড়া-বাচ্চা আছে?’ দুর্যোগ মাথায় নিয়ে দাওয়ায় কান্তি, প্রশংসার বন্যা সোশ্যাল মিডিয়ায়
সুইৎজারল্যান্ডের আইন অনুসারে, ৬০ বছর ধরে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ না রাখলে প্রাথমিক ভাবে অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনা হয়, যাতে প্রাপকরা ওই সম্পত্তি দাবি করতে পারেন। কিন্তু এর পরেও তাঁরা কোনও যোগাযোগ না করলে ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সুইস সরকার।