চার হাজার আলোকবর্ষ দূরে নতুন গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মেয়াদ আর কয়েকশো কোটি বছর। তার পরেই সূর্য ‘গ্রাস’ করে নেবে পৃথিবীকে। সূর্যের তাপে টিকতে না পেরে তারও অনেক আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে প্রাণিজগৎ। বিজ্ঞানীদের একাংশ এমনটাই দাবি করে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে। তাঁদের মতে, পৃথিবী এগোচ্ছে সেই ‘শেষের’ দিকে। তবে চার হাজার আলোকবর্ষ দূরে পৃথিবীর মতোই অন্য এক গ্রহের দেখা মিলেছে সম্প্রতি। যা বিজ্ঞানীদের সেই ভবিষ্যদ্বাণী বদলে দিতে পারে। সেই নতুন গ্রহে আশার আভাস খুঁজে পেয়েছেন কেউ কেউ।
ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল মহাকাশ গবেষক হাওয়াই দ্বীপ থেকে বিশেষ টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ওই নতুন গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। গ্রহটির সঙ্গে পৃথিবীর অনেক মিল রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। পৃথিবীর মতোই পাথুরে ওই গ্রহের উপরিতল। ভরও পৃথিবীর প্রায় সমান। স্যাজিটারিয়াস (ধনু) নক্ষত্রলোকে সাদা রঙের একটি বামন নক্ষত্রকে (হোয়াইট ডোয়ার্ফ) প্রদক্ষিণ করছে সেই গ্রহ।
এই গ্রহের অবস্থা দেখেই বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, কয়েকশো কোটি বছরের মধ্যে পৃথিবীর অবস্থা তেমনই হতে পারে। অর্থাৎ, সূর্যের তাপে পৃথিবী পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে না-ও যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সূর্যের ভবিষ্যৎ হতে পারে ওই বামন নক্ষত্রটির মতো। যদিও পৃথিবী বেঁচে থাকলেও তার মধ্যেকার মানুষ বা প্রাণীদের অস্তিত্ব সেই সময় থাকবে না, অনেকেই তা নিয়ে একমত।
নক্ষত্রের পারমাণবিক জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে তার বাইরের স্তরগুলি ধ্বংস হয়ে যায়। বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, ছ’শো কোটি বছরের মধ্যে সূর্যের পারমাণবিক জ্বালানি ফুরিয়ে আসবে। তখন প্রথমে সূর্য ফুলে উঠবে এবং নিকটবর্তী গ্রহগুলিকে গ্রাস করবে। তার পর তা আবার চুপসে ছোট হয়ে যাবে এবং বামন নক্ষত্রের রূপ নেবে। তাকে নক্ষত্র না বলে নক্ষত্রের অবশিষ্টাংশ বলা যায়। চার হাজার আলোকবর্ষ দূরে যে গ্রহটির হদিস পাওয়া গিয়েছে, তার সঙ্গে নক্ষত্রের দূরত্ব পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু সূর্যের কাছাকাছি থেকে কী ভাবে তার ‘গ্রাস’ এড়াবে পৃথিবী?
ক্যালিফর্নিয়ার গবেষকদের মতে, সূর্যের ধাক্কায় তার নিকটবর্তী গ্রহগুলি দূরের কক্ষপথে সরে যেতে পারে। একমাত্র তা হলেই পৃথিবীর অস্তিত্ব টিকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।