Afghanistan

Taliban issue: আফগানিস্তান: ইসলামাবাদকে চাপ নয়াদিল্লির

পাঁচ দেশের প্রতিনিধিদের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ভারত এবং তাদের অভিমুখ, উদ্বেগ একই রকম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১০
Share:

এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।

মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশকে সঙ্গে নিয়ে কাবুল প্রশ্নে পাকিস্তানের উপরে চাপ তৈরি করল নয়াদিল্লি। আজ ভারত-মধ্য এশিয়া সংলাপ শীর্ষক সম্মেলনে যে সম্মিলিত বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে কোথাও ইসলামাবাদ বা পাক মদতপ্রাপ্ত হক্কানি নেটওয়ার্কের নাম করা হয়নি। কিন্তু বারবার বিভিন্ন ভাবে সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যৌথ ভাবে জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযানের ডাকও দিয়েছে ভারত।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দিল্লিতে মধ্য এশিয়ার যে পাঁচটি দেশের বিদেশমন্ত্রীরা (কাজ়াখস্তান, উজ়বেকিস্তান, তাজিকিস্তান, কিরঘিজ়স্তান, তুর্কমেনিস্তান) উপস্থিত ছিলেন, তাদের মধ্যে তিনটির সীমানা আফগানিস্তানের সঙ্গে। ফলে নয়াদিল্লিতে বসে তালিবানকে বার্তা দেওয়ার কাজে আজকের বৈঠকটিকে সাউথ ব্লক ব্যবহার করল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।

পাঁচ দেশের প্রতিনিধিদের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ভারত এবং তাদের অভিমুখ, উদ্বেগ একই রকম। প্রত্যেকে চাইছে আফগানিস্তানে সমাজের সর্বস্তরকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার তৈরি করা হোক। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, মাদক চোরাচালান, নারী-সংখ্যালঘু-শিশুদের অধিকার রক্ষা, প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই মানবিক সহায়তা পৌঁছনোর ব্যবস্থা করার বিষয়গুলি নিয়ে বৈঠকে সরব হয়েছেন জয়শঙ্কর।

Advertisement

বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের সবার সঙ্গেই আফগানিস্তানের সভ্যতাগত এবং ঐতিহাসিক গভীর সংযোগ রয়েছে। সেই দেশ সম্পর্কে আমাদের অভিমুখ এবং উদ্বেগ একই রকম। আফগানিস্তানের মানুষকে সহায়তা করার জন্য আমাদের উপায় খুঁজে বার করতেই হবে।”

শুধু বিদেশমন্ত্রীর বক্তৃতা নয়, আজ বৈঠকের পরে দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে ছ’টি দেশের পক্ষ থেকেও। সেখানে এই উদ্বেগ এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতা প্রকট। বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, ‘ছটি দেশের মন্ত্রীই যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদের চরম নিন্দা করেছেন। সেই সঙ্গে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদের স্বর্গোদ্যান গড়তে মদত দেওয়া, আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস চলিয়ে যাওয়ায় সাহায্য করা, জঙ্গি কার্যকলাপে পুঁজি সরবরাহ, সাইবার প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মৌলবাদ ছড়ানোর মতো বিষয়গুলি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং মানবতাবাদের মৌলিক নীতিবিরুদ্ধ।

জোর দিয়ে বলা হচ্ছে, ‘যারা সন্ত্রাসবাদ সংগঠন করছে অথবা পুঁজি জোগাচ্ছে, তারা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য। সে ক্ষেত্রে অন্য দেশে থাকলে, তাদের ফিরিয়ে আনা এবং সাজা দেওয়ার নীতি কঠোর ভাবে মেনে চলা প্রয়োজন।’ এর পরেই যৌথ বিবৃতিতে আনা হয়েছে আফগানিস্তান প্রসঙ্গ।

এই প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘পাঁচ দেশের বিদেশমন্ত্রী আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। গোটা অঞ্চলে তালিবান শাসনের কী প্রভাব পড়ছে, তা-ও খতিয়ে দেখেছেন। তাঁরা শান্তিপূর্ণ, সুস্থিত, নিরাপদ এবং শক্তিশালী আফগানিস্তানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। সার্বভৌমত্য, ঐক্য, ভৌগলিক অখন্ডতা এবং অন্যের বিষয়ে নাক না গলানো অভ্যাসের প্রতি সম্মান বজায় রাখাও জরুরি।’

আফগানবাসীর কথা আলোচনা করে যাতে সে দেশে মানবিক সাহায্য পাঠানো জারি রাখা হয়, সে ব্যাপারে ঐকমত্য হয়েছে বলেও বিবৃতিতে দাবি। এর পরে পাকিস্তানের দিকে নিশানা করে বলা হয়েছে, ‘একটি বিষয়ে সকলেই সহমত, তা হল, আফগানিস্তানকে সন্ত্রাসবাদীদের প্রশিক্ষণ, আশ্রয়, কৌশল রচনা, অথবা সন্ত্রাসবাদীদের জন্য অর্থ সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা যাবে না।’ সব দেশকে জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement