বিএনপি-র সদর দফতরের সামনে মানুষের ঢল। বুধবার ঢাকায়। ছবি: পিটিআই।
পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর মদতপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামী অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে শক্তিশালী হয়ে উঠতে চলেছে বুঝতে পেরে কপালে গভীর ভাঁজ সাউথ ব্লকের।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, এই ঘটনা এক দিকে যেমন বাংলাদেশের প্রগতিশীল ধ্যানধারণার জন্য বিপজ্জনক, অন্য দিকে ভারতের জন্য খুবই প্রতিকূল। গত পঞ্চাশ বছরে চরমপন্থাকে উস্কানি দেওয়া এবং প্রত্যক্ষ ভাবে জামায়াতের তাতে অংশগ্রহণ সেই ইঙ্গিত বহন করছে বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক এবং দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। পাশাপাশি সে দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনও এর ফলে বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বর্তমান জামায়াতের নেতারা এবং তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্রশিবির, ভারত-বিরোধী বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে বলেই মনে করছে নয়াদিল্লি। হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে ভারত-বিরোধিতাকেও সফল ভাবে যুক্ত করেছে তারা। ঢাকায় ঐতিহ্যশালী ভারতীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র পুড়িয়ে দেওয়ার পিছনেও জামায়াতের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
সোমবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠন নিয়ে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে নেতৃত্ব। হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন জামায়াতেকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। লস্কর-ই-তইবা-সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জামায়াতের যোগাযোগের প্রমাণ রয়েছে ভারতের কাছেও। ২০০১-২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াতে শাসনের সময়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গিরা বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করত, এই অভিযোগ বারবার উঠেছে। পরে হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর সেই জঙ্গিদের ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
গত দু’দিনে জেল থেকে বেশ কিছু জামায়াতে নেতাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংখ্যালঘু মানুষের উপর অত্যাচার ও মন্দির-গুরুদ্বারে হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই ধরনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে আজ চিঠি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবনীত সিংহ। নানক শাহি এবং সঙ্গত টোলার দু’টি ঐতিহাসিক গুরুদ্বার রক্ষা করার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য জয়শঙ্করকে বাংলাদেশের সেনা বা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কথা বলার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, বিজেপির রাজ্যসভার সদস্য শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অবিলম্বে এই পীড়ন থামানো উচিত।’’