—ফাইল চিত্র।
দেশের অর্থনীতি কোণঠাসা। মুখ থুবড়ে পড়েছে বৃদ্ধির হার। বেসরকারি লগ্নির দেখা নেই। সে ভাবে আসছে না বিদেশি বিনিয়োগও। তার উপরে টালমাটাল জার্মানি, ব্রিটেনের মতো পশ্চিমি দেশের অর্থনীতি। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যের রাস্তা আরও মসৃণ করতে চায় কেন্দ্র। আগামী ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর, দু’দিনের সফরে রাশিয়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যতম প্রধান অতিথি হিসেবে সেখানে যোগ দেবেন ‘ইস্টার্ন ইকনমিক ফোরাম’-এ। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠককে গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য সম্পর্ক পোক্ত করাকেও এই সফরে পাখির চোখ করছেন নরেন্দ্র মোদী।
তবে ভারত-রাশিয়া শীর্ষ নেতৃত্ব যে শুধু লগ্নি-আলোচনায় আটকে থাকবেন না, তা-ও জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। পুতিনের সঙ্গে মোদী ঘুরে দেখবেন জাহাজ কারখানা। দু’জনে দেখতে যাবেন জুডো প্রতিযোগিতাও। ক্যারাটে, জুডোর একনিষ্ঠ ভক্ত পুতিনের খালি গায়ে ছবি এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছে সারা দুনিয়া। এ বার জুডোর আসরে তাঁর সঙ্গী ‘ছাপ্পান্ন ইঞ্চি ছাতির’ মোদীও!
বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে আজ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই সফরে যাবেন রেল ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল, গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশ-সহ চার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আর অন্তত ৫০ জন শিল্পপতি। চেন্নাই থেকে ভ্লাদিভস্তক পর্যন্ত সমুদ্রপথে পণ্য আনানেওয়া বাড়ানো নিয়ে কথা হবে রাশিয়ায়। কৃষি, কয়লা, খনন শিল্প থেকে শুরু করে হীরে— বিভিন্ন বিষয়ই উঠে আসার কথা আলোচনায়।
জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধির নিরিখে চিনের পরেই বিশ্বে দু’নম্বরে রয়েছে ভারত। অথচ পেট্রোপণ্যের বেশি ভাগটাই আমদানি করতে হয়। তার উপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে ইরানের থেকে তেল কেনায় দেওয়াল ওঠার কারণে সমস্যা বেড়েছে। তেলের বিকল্প জোগানদারের সন্ধানে ভারত সৌদি আরবের সঙ্গে সম্প্রতি চুক্তি করেছে। এখন হাত ধরতে চাইছে রাশিয়ারও। ভ্লাদিভস্তক থেকে চেন্নাইয়ে ভাল সমুদ্রপথের সন্ধানের অন্যতম কারণও নাকি ওই রুশ তেলের জোগানই। পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলি থেকে কয়লা-সহ বিভিন্ন খনিজ আনার পরিকল্পনা রয়েছে কি না, তা-ও স্পষ্ট হবে আগামী দিনে।