সোল শান্তি পুরস্কার নিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
২০১৮-র সোল শান্তি পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং বিশ্বের অর্থনীতির উন্নয়নে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্যই শুক্রবার মোদীর হাতে এই পুরস্কার তুলে দিল দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার।
বৃহস্পতিবার সোলে পৌঁছন মোদী। ২০১৫-র পর দক্ষিণ কোরিয়ায় এটাই তাঁর দ্বিতীয় বারের সফর। পুরস্কারের আয়োজন করেছিল সোল পিস প্রাইজ ফাউন্ডেশন। পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত মোদী বলেন, “সোল শান্তি পুরস্কার পেয়ে আমি সম্মানিত। তবে এই পুরস্কার ব্যক্তিগত ভাবে আমার নয়, এই পুরস্কার গোটা ভারতবাসীর। গত পাঁচ বছরের কম সময়ে দেশ যে সাফল্য দেখেছে, এটা তারই ফসল।” মহাত্মা গাঁধীর ১৫০তম জন্মজয়ন্তীতে এই পুরস্কার পাওয়ায় তিনি আরও গর্বিত বলে জানান মোদী।
এর আগে এই পুরস্কার পেয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রাক্তন মহাসচিব কোফি আন্নান, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল, ডক্টরস উইদাউট বর্ডার এবং অক্সফ্যাম-এর মতো আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠন। এ বার এই তালিকায় নতুন সংযোজন নরেন্দ্র মোদী। ১৪তম প্রাপক হিসেবে এই পুরস্কার পেলেন তিনি। এ দিন মোদীর হাতে শান্তি পুরস্কার তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁর জীবনের উপর আধারিত একটি তথ্যচিত্রও দেখানো হয় অনুষ্ঠানে।
আরও পড়ুন: যে কোনও সময় প্রত্যাঘাতের আতঙ্ক! যুদ্ধকালীন তৎপরতা এখন পাকিস্তান জুড়ে
আরও পড়ুন: ভারতের পাশে দাঁড়াল রাষ্ট্রপুঞ্জ, নাম না করে কড়া হুঁশিয়ারি পাকিস্তানকে
এ দিন ফের সন্ত্রাসবাদের প্রসঙ্গ তোলেন মোদী। সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছেন ৪০ সিআরপি জওয়ান। শুধু ভারত নয়, সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে গোটা বিশ্ব। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তাকে চোখ রাঙাচ্ছে সন্ত্রাসবাদ। এ প্রসঙ্গে মোদী বলেন, “১৯৮৮ থেকে দ্রুত হারে বদলাচ্ছে বিশ্বের ছবিটা। দারিদ্রই ছিল বিশ্বের কাছে একটা মূল চ্যালেঞ্জ। এখন তা আয়ত্তে আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের কাছে আজকের চ্যালেঞ্জের ধরনটা অন্য রকম। এখন মূল চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পরিবর্তন এবং সন্ত্রাসবাদ।”
যে ভাবে গোটা বিশ্ব থেকে দারিদ্র ধীরে ধীরে মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে, ঠিক একই ভাবে এ বার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়তে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে বলেই জানান মোদী। তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদের কোমর ভেঙে দিতে সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন দেশগুলিকে হাতে হাত মিলিয়ে লড়তে হবে। আর এটাই সেই উপযুক্ত সময়।” উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিভাজন এবং দু’দেশের মধ্যে যে বৈরিতার সম্পর্ক সে উদাহরণও এ দিন তুলে ধরেন মোদী। বলেন, “কোরিয়ার মতোই বিভাজন এবং সীমান্তে টানাপড়েনের যন্ত্রণায় ভুগছে ভারত। ভারতের শান্তি বার বার বিঘ্নিত করছে সীমান্ত-সন্ত্রাস।” পুরস্কার মঞ্চ থেকে তাই মোদীর বার্তা, সম্প্রীতি দিয়ে ঘৃণাকে বদলে দিতে হবে, উন্নয়ন দিয়ে ধ্বংসকে রুখতে হবে, সন্ত্রাসের বিচরণক্ষেত্রে শান্তির বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে। আর এটা তখনই সম্ভব হবে যখন সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পরস্পরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে।
(সারাবিশ্বের সেরা সব খবরবাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)