রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল ছবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আজ টেলিফোনে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফের মনে করিয়ে দিলেন, একমাত্র আলোচনা ও কূটনীতির পথেই ইউক্রেনের দ্বন্দ্ব মেটানো সম্ভব।
গত সেপ্টেম্বর মাসে শাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনেপুতিনকে বার্তা দিয়ে মোদী বলেছিলেন, ‘‘এই যুগ যুদ্ধের নয়।’’ প্রকাশ্যে রাশিয়ার উদ্দেশে এই মন্তব্য করার জন্য মোদীর ভূয়সী প্রশংসা করেছিল পশ্চিম। জনসমক্ষে ‘তিরস্কার’ হিসেবেই দেখা হয়েছিল এই বার্তাকে। শোনা গিয়েছে আজও মোদী যুদ্ধে ইতি টানার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। ক্রেমলিন নিজেদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে— ‘‘নরেন্দ্র মোদীর অনুরোধে ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিষয়ে রাশিয়ার মৌলিক বিশ্লেষণ ঠিক কী, তা জানিয়েছেন।’’
এসসিও সম্মেলনে দুই রাষ্ট্রনেতার সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেই কথাবার্তা আজ আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দু’দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। বিশেষ করে শক্তি, বাণিজ্য, লগ্নি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তায় একে-অপরকে সহযোগিতা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয় মোদী ও পুতিনের।
এ বারে জি২০ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছে ভারত। এ নিয়েও কথা হয়েছে দু’পক্ষের। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘‘ভারতের নেতৃত্বে শাংহাই কর্পোরেশনঅর্গানাইজেশনে দু’দেশের একসঙ্গে কাজ করার দিকে তাকিয়ে আছেন পুতিন।’’ নিয়মিত ভাবে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন দুই রাষ্ট্রনেতা।
ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে দীর্ঘদিন চুপ থেকেছিল দিল্লি। সে নিয়ে বারবার উষ্মা প্রকাশ করে পশ্চিমের দেশগুলি। এসসিও সম্মেলনে প্রথম রাশিয়ার উদ্দেশে বার্তা দেন মোদী। জি২০-র ঘোষণাপত্রেও জায়গা পায় মোদীর সেই বক্তব্য। আজ ফের যুদ্ধ নিয়ে কথা হয়েছে দু’পক্ষের। রাশিয়ার দাবি, আমেরিকা-ইউরোপপ্রভাবিত করতে চাইছে ভারতকে। তবে আজকের কথার পরে ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপোভ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের দ্বন্দ্ব নিয়ে দিল্লির অবস্থান একই রয়েছে। ইউরোপ শুধু নিজেদের সমস্যা নিয়ে কথা বলে, অন্যদের নিয়ে ওদের মাথাব্যথা নেই।
গত সপ্তাহে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারত ও প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘গোটা বিশ্বের স্বর’ হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর। আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে যত দ্রুতসম্ভব যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করবেন তিনি, এইআশ্বাসও দেন জয়শঙ্কর। ইউক্রেন অবশ্য ভারতের অবস্থান নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা গত সপ্তাহে একটি ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছিলেন, ভারত সস্তায় রুশ তেল কিনছে, আর রুশ আগ্রাসনে প্রতি দিন মানুষ মরছে ইউক্রেনে। জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘গোটা ইউরোপ রাশিয়ার থেকে যা তেল কেনে, তার একটা ছোট্ট অংশ কেনে ভারত।’’