প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আফগানিস্তানের তালিবানকে টপকে গেল মায়ানমারের সামরিক জুন্টা। আফিমের চাষে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওই দেশ এখন শীর্ষে বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘অফিস ফর ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম’ (ইউএনওডিসি)-এর বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
২০২১ সালের অগস্টে দ্বিতীয় বার গৃহযুদ্ধে জিতে কাবুলে ক্ষমতা দখলের পরেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ। জানিয়েছিলেন, প্রথম তালিবান জমানার উল্টো পথে হেঁটে আফগানিস্তানে আফিমের চাষ এবং মাদকের কারবার বন্ধ করতে সক্রিয় হবেন তাঁরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট বলছে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে তারা।
ইউএনওডিসি-র প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গত আড়াই বছরে আফগানিস্তানে আফিম (পপি) চাষ ৯০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। চলতি বছর ওই দেশে ৩৩০ টন আফিম উৎপাদনের সম্ভাবনা। অন্য দিকে, গত এক বছরে প্রায় ৩৬ শতাংশ বেড়ে মায়ানমারে ১,০৮০ টন আফিম উৎপাদিত হতে পারে। তবে শুধু সেনা জুন্টা নয়, বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলিতেও দেদার আফিম চাষ হচ্ছে মায়ানমারে। প্রসঙ্গত, হেরোইন-সহ একাধিক মাদক তৈরির মূল উপাদান হল আফিম।
কয়েক বছর আগেও আফিম চাষ এবং মাদক উৎপাদন তালিবান অর্থনীতির অন্যতম ‘স্তম্ভ’ ছিল। বছর পাঁচেক আগে প্রকাশিত একটি আন্তর্জাতিক রিপোর্ট জানিয়েছিল, ড্রাগের ব্যবসা এবং চোরাচালান থেকে তালিবানের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। নীলকর সাহেবদের ধাঁচেই অধিকৃত এলাকায় কৃষকদের জোর করে আফিম চাষ করাতেন তালিবান কমান্ডারেরা। এ ছাড়া তালিবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ড্রাগ তৈরির কারখানা ছিল বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক চক্রের। আশ্বাস দিলেও বিপুল আয়ের এই উৎসে আঘাত করার সদিচ্ছা তালিবানের রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান ছিল আন্তর্জাতিক মহল। কিন্তু রিপোর্ট বলছে, প্রতিশ্রুতি মেনেই কাজ করেছেন তালিবান নেতা হিবাতুল্লা আখুন্দজাদা, আবদুল গনি বরাদরেরা।