প্রতীকী ছবি।
রাশিয়ার জেলগুলিতে কী ভাবে বন্দিদের উপরে অত্যাচার ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়, তার ভিডিয়ো সম্প্রতি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। ধর্ষণ ও অত্যাচারের ভিডিয়োগুলি রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে। সের্গেই সাভেলিয়েভ নামের প্রাক্তন এক বন্দি ভিডিয়োটি ফাঁস করেন। এখন ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। যে ব্যক্তি এই ‘তথ্য’ ফাঁস করে দিয়েছেন, তিনি আপাতত ফ্রান্সে, কিন্তু তাঁকে জেলে ভরতে উঠে পড়ে লেগেছে মস্কো।
মাদক পাচারের অভিযোগে সের্গেইয়ের সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। তাই কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে জেলের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়টি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই সূত্রে জেলের সার্ভারে থাকা বহু ভিডিয়ো সের্গেইয়ের হাতে আসে। তার মধ্যে সারাটোভ জেলের কয়েকটি ধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচারের ভিডিয়ো তিনি হস্তগত করেছিলেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় সেগুলি নিয়ে যান তিনি। তার পরে সেগুলি তিনি দিয়ে দেন রাশিয়ার একটি মানবাধিকার সংগঠনকে। তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয় কয়েকটি ভিডিয়ো। এর পরেই নড়েচড়ে বসে রুশ প্রশাসন। সের্গেইকে তলব করে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক। কিন্তু তিনি হাজির হননি। পরে তাঁর নাম ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় তুলে দেওয়া হয়েছে। সের্গেইয়ের কথায়, ‘‘আমাকে কেন ডেকে পাঠানো হয়েছে, জানি না। আমার ধারণা, রাষ্ট্রের গোপনীয় বিষয় প্রকাশের জন্যই হয়তো তলব করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, প্রশাসন তাঁর ‘মুখ বন্ধ’ করতে চায়।
সের্গেই জানান, রাশিয়ার জেলে বন্দিদের উপরে নির্মম অত্যাচার বহু দিন ধরে চলে আসছে। রয়েছে যৌন নির্যাতনও। একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, মূলত দোষ স্বীকার করাতে এবং অন্য বন্দিদের নির্যাতনের ভয়াবহতা বোঝাতেই অত্যাচার করা হয়।
বেলারুশের বাসিন্দা সের্গেই জানিয়েছেন, জেলের অত্যাচারের কথা তিনি রুশ প্রশাসনকে জানাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রশাসন কিছু শুনতেই চায় না। সের্গেই বলেন, ‘‘আমার প্রতি রাষ্ট্র প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবে বুঝতে পারছিলাম। তাই ফেব্রুয়ারিতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাই।’’ গত সপ্তাহে তিনি ফ্রান্সে পৌঁছেছেন। প্যারিসের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন তিনি।