Israel-Hamas Conflict

বড়দিনের হামলায় গাজ়ায় হত ২৪১

রবিবার রাতে মধ্য গাজ়ার অল-আকসা হাসপাতালে ও শরণার্থী শিবিরে হামলা হয়েছিল। গতকাল নিজের চোখে সেই ধ্বংসলীলা দেখে এসেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রাষ্ট্রপুঞ্জ শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:৫১
Share:

বিশ্বজুড়ে যখন বড়দিন পালিত হচ্ছিল, তখনও গাজ়ায় নির্বিচারে চলছে গোলাগুলি। —ফাইল চিত্র।

গতকাল বিশ্বজুড়ে যখন বড়দিন পালিত হচ্ছিল, তখনও গাজ়ায় নির্বিচারে চলছে গোলাগুলি। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা গাজ়ার হাসপাতাল থেকে শরণার্থী শিবির— কোথাও হামলা চালাতে বাকি রাখেনি। গাজ়ার প্রশাসন সূত্রের খবর, ইজ়রায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ২৪১ জন নিহত হয়েছেন। জখম ৩৮২ জন। ইজ়রায়েলি সেনার দাবি, ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ গাজ়ায় ১০০টি নিশানায় সফল ভাবে হামলা চালিয়েছে তারা।

Advertisement

রবিবার রাতে মধ্য গাজ়ার অল-আকসা হাসপাতালে ও শরণার্থী শিবিরে হামলা হয়েছিল। গতকাল নিজের চোখে সেই ধ্বংসলীলা দেখে এসেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা। তাঁদেরই এক জন গেমা কনেল জানালেন, ‘‘গাজ়ার অবস্থা এখন নরকের মতো। হাসপাতালে ভিড় উপচে পড়ছে। গুরুতর জখম হলেও চিকিৎসার বন্দোবস্ত নেই। গতকালের হামলায় পুরো পরিবারকে হারিয়েছেন অনেকে।’’ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র এক চিকিৎসক দলের সদস্য শন কেসি। অল-আকসা হাসপাতালের কথা বলতে গিয়ে চোখে জল এল তাঁর। ৯ বছরের আহমেদের গল্প শোনালেন শন। তিনি জানালেন, মধ্য গাজ়ার এক শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল আহমেদের পরিবার। কয়েক দিন আগে রাস্তা পার করে বাবা-মায়ের কাছে যাচ্ছিল আহমেদ। এমন সময় চোখের সামনে হামলা হল শিবিরে। বোমার আঘাতে রাস্তায় ছিটকে পড়ল আহমেদ। মাথার ঘিলু বেরিয়ে এল। এখনও বেঁচে রয়েছে সে। আল-আকসা হাসপাতালে তাকে যন্ত্রণা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়েছে শুধু। ধুঁকতে থাকা হাসপাতালে জটিল অস্ত্রোপচার করার মতো পরিকাঠামো নেই। ফলে আহমেদের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই চিকিৎসকদের। গাজ়ার খান তিরিশেক হাসপাতাল রয়েছে। তার মধ্যে এখন বড়জোর ৯টি ধুঁকতে ধুঁকতে চলছে। বাকিগুলো পুরোপুরি বন্ধ। কেসি বলেছেন, ‘‘হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু চোখে দেখা যায় না। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বাচ্চারা বোমার আঘাতে উড়ে যাচ্ছে। বিছানায় শুয়ে ঘুমের মধ্যেও মরছে।’’

এখনও পর্যন্ত হামলা বন্ধের কোনও ইঙ্গিত দেননি নেতানিয়াহু। উল্টে গতকাল পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে তিনি বলেছেন, ‘‘গাজ়ার পরিস্থিতি দেখে এসেছি।... তবে আমাদের জওয়ানদের বলিদান বিফলে যাবে না। সম্পূর্ণ ভাবে জয় না আসা পর্যন্ত আমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাব। তবে পণবন্দিদের উদ্ধারে আরও কিছুটা সময় লাগবে।’’ সূত্রের খবর, এই সময় পণবন্দিদের পরিবারের লোকেরা পার্লামেন্টে বিক্ষোভ দেখান। পোস্টার ও ব্যানার হাতে তাঁরা স্লোগান দেন, ‘‘সময় আর নেই। এখনই সমাধান চাই।’’
এখনও ১২৯ জন ইজ়রায়েলি হামাসের হাতে বন্দি। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। সময় যত গড়াচ্ছে, বাকিদের বেঁচে থাকার আশাও ক্ষীণ হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘পণবন্দিদের উদ্ধার করতে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে গাছের প্রতিটি পাতা নাড়িয়ে দেখা হবে। উল্টে দেখব প্রতিটা পাথর।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement