ইজ়রায়েল ও প্যালেস্তাইন সংঘর্ষ চলতেই থাকছে। —ফাইল চিত্র।
এক দিকে, মানবিকতার খাতিরে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আজই আলোচনায় বসতে চলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা। গত কাল গভীর রাত থেকে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং গাজ়া ভূখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায় আরও তীব্র আক্রমণ শুরু করল ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনী।
প্যালেস্টাইন প্রশাসন জানিয়েছে, আজ ভোর রাতে দক্ষিণ গাজ়ায় মিশর সীমান্তবর্তী রাফা শহরে ইজ়রায়েলি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৪ জনের। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৭টি শিশু এবং পাঁচ জন মহিলা। পাশাপাশি আজ সকাল থেকে ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের জেনিনেও জোরদার তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। সেই অভিযান চলাকালীন কমপক্ষে ৪ জন নিহত হয়েছে বলে খবর। কাল মাঝরাত থেকে শুরু হওয়া হামলা গাজ়ার খান ইউনিসেও ২ জন প্যালেস্টাইনি প্রাণ হারিয়েছেন। বেসরকারি মতে সেই সংখ্যাটা ২০।
ইজ়রায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট গত কালই জানিয়েছিলেন, গাজ়া ভূখণ্ডে পাকাপাকি ভাবে থাকার কোনও ইচ্ছে তাঁদের বাহিনীর নেই। যদিও প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দাবি, গাজ়া ভূখণ্ড ছেড়ে পাকাপাকি ভাবে কখনওই যাবে না ইজ়রায়েলি সামরিক বাহিনী। এমনকি গাজ়ায় প্যালেস্টাইনিদের প্রবল প্রতিরোধ সত্ত্বেও অসামরিক একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালুর ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন তিনি। একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু স্পষ্ট করেছেন, যতই চাপ আসুক না কেন, গাজ়ার নিয়ন্ত্রণ তাঁরা ছাড়বেন না।
বেথলেহেম, রামাল্লা, নাবলুস, তুবাসের মতো বিভিন্ন এলাকায় জোরদার তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষের অভিযোগ, কোনও রকমের প্রতিরোধ ছাড়াই তাঁদের উপর যথেচ্ছ অত্যাচার চালাচ্ছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। অভিযোগ, আক্রান্ত এলাকাগুলি থেকে অ্যাম্বুল্যান্সও বেরোতে দিচ্ছে না ইজ়রায়েলি সেনা।
এর মধ্যেই প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক আজ ঘোষণা করেছে, আপাতত তাদের আর মাত্র ১১টি হাসপাতাল এখন পরিষেবা দিতে পারছে। তা-ও পুরোপুরি নয়। আরও কিছু দিন যুদ্ধ জারি থাকলে, হাসপাতালগুলির পরিস্থিতি আরও খারাপের আশঙ্কা রয়েছে। শীঘ্রই পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হতে পারে আরও হাসপাতাল।
রাফা, খান ইউনিস এবং জেনিনের মতো যে সব এলাকায় গত রাত থেকে আকাশ পথে হামলা শুরু হয়েছে, সেখানে ধ্বংসস্তূপে বহু মানুষের আটকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ধ্বংসস্তূপ থেকে আহতদের বার করার মতো সরঞ্জামও তাঁদের নেই। তাঁরা চাইলেও কিছু করতে পারছেন না। তাই নিহতের সংখ্যা এক লাফে প্রচুর বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপুঞ্জ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির সহায়তার দিকেই তাকিয়ে প্যালেস্টাইনের সাধারণ মানুষ।