ফাইল চিত্র
লন্ডন, ২ এপ্রিল: টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে কবেই, তবু লকডাউন চলছে ব্রিটেনে। ছ’জনের বেশি জমায়েত বারণ। পারস্পরিক দূরত্ববিধি ও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। তার মধ্যেই আজ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, কেনিয়া, ফিলিপিন্স-সহ বেশ কিছু দেশকে বিপজ্জনক তালিকাভুক্ত ঘোষণা করল ব্রিটেন। জানানো হল, নতুন স্ট্রেনের বাড়বাড়ন্ত রুখতে ব্রিটেন থেকে এই সব দেশে সফর করা যাবে না।
এ পর্যন্ত ৩ কোটি ১০ লক্ষ বাসিন্দাকে কোভিড টিকার প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়েছে ব্রিটেনে। দ্বিতীয় ডোজ়টিও পেয়ে গিয়েছে ৪৫ লক্ষ বাসিন্দা। কিন্তু নতুন স্ট্রেনের দাপটে তাতেও দুশ্চিন্তায় প্রশাসন। এর মধ্যে ফাইজ়ার-বায়োএনটেক তৃতীয় ট্রায়ালের রিপোর্টে জানিয়েছে, টিকার দ্বিতীয় ডোজ়টি নেওয়ার ৬ মাস পরেও ৯১% কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে তাদের প্রতিষেধক। কিন্তু এ দিনই আবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার টিকা চ্যাডক্স১ নিয়ে ব্রিটিশ স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, ‘চ্যাডক্স১’ প্রয়োগে কারও কারও শরীরে রক্ত জমাট বাধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে। তবে সংখ্যাটা খুবই কম।
ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘দ্য মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ্কেয়ার প্রোডাক্টস রেগুলেটরি এজেন্সি’ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তারা মাত্র ৩০টি রিপোর্ট পেয়েছে। টিকাকরণ চালিয়ে যাওয়ারই পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি। তাদের বক্তব্য, হাতেগোণা সামান্য কিছু লোকের শরীরে এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ক্ষতির থেকে লাভের অঙ্ক বেশি। অতএব জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে টিকাকরণ চালিয়ে যাওয়াই বুদ্ধির কাজ হবে। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে তারা জানিয়েছে, ২৪ মার্চ পর্যন্ত ব্রিটেনে ১৮ লক্ষ মানুষকে চ্যাডক্স ১ দেওয়া হয়েছে। তাদের হাতে মাত্র ২২টি রিপোর্ট এসেছে ‘সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস’-এর। এতে মুখ ও মাথার খুলিকে যুক্তকারী নাকের ক্যাভিটিতে (সাইনাস) রক্ত জমাট বেধে যায়। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয়। আরও ৮টি রিপোর্টে টিকাকরণের পরে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির প্লেটলেটস কমেছে।
ইউরোপিয়ান মেডিসিনস এজেন্সি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও চ্যাডক্স১-এর টিকাকরণ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা বলেছে, ‘‘রোগীদের নিরাপত্তাই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটেনের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, হু— সবাই জানিয়েছে আমাদের টিকার অপকারের থেকে উপকারিতা অনেক বেশি।’’ যদিও ইউরোপের বেশ কিছু দেশ চ্যাডক্স১ প্রয়োগ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। শ্লথ গতিতে ফাইজ়ারের টিকা দেওয়া চলছে। এ নিয়ে হু-র ইউরোপীয় শাখা কাল উষ্মা প্রকাশ করেছে।
আপাতত ইস্টারের ছুটি নিয়ে চিন্তায় ইউরোপ। ইটালিতেও লকডাউন জারি। প্রায় জনমানবহীন সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় গুড ফ্রাইডে পালন করেছেন পোপ ফ্রান্সিস।