গত ছ’মাসে বাংলাদেশের পুলিশের উপরে ২২৫ বার হামলা! —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বাংলাদেশে গণপিটুনি এবং আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। সে দেশের সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ বাংলাদেশের পুলিশ সদর দফতরকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, গত ছ’মাসে কেবল পুলিশের উপরেই ২২৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ‘ভুয়ো পুলিশ’ বলে অভিহিত করে কর্তব্যরত পুলিশকর্মী বা পুলিশ আধিকারিকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে উত্তেজিত জনতা।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে এক পুলিশকর্মীকে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে মারধর করেন স্থানীয় কয়েক জন। পুলিশকর্মীর পোশাক টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়। তার পরেই কেঁদে ফেলেন নিগৃহীত পুলিশকর্মী। ‘প্রথম আলো’কে ওই পুলিশকর্মী বলেন, “যখন পুলিশের পোশাক ছিঁড়ে ফেলে, তখন আর আবেগ ধরে রাখতে পারিনি, কেঁদে ফেলেছি।”
পরিসংখ্যান বলছে গত জানুয়ারি মাসে ৩৮টি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৭টি ঘটনায় পুলিশের উপর হামলা চালানো হয়েছে। বহু ক্ষেত্রে পুলিশকে আক্রমণ করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটছে। হামলা চালানো হচ্ছে সাধারণ মানুষের উপরেও। মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’র পরিসংখ্যান অনুসারে, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের শাসনকালে গত সাত মাসে বাংলাদেশে গণপিটুনির অন্তত ১১৪টি ঘটনায় ১১৯ জন নিহত এবং ৭৪ জন আহত হয়েছেন। বহু ক্ষেত্রেই চোর-ডাকাত সন্দেহে নিরীহ মানুষদের মারধর করছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা।
এই ধরনের হামলায় ধৃতদের মধ্যে যেমন রয়েছেন বিএনপি-র নেতা-কর্মীরা, তেমনই রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও। তবে শক্ত হাতে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে চাইছে বাংলাদেশ পুলিশ। এ ক্ষেত্রে সমাজের সব স্তরের মানুষের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রংপুরে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, “ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের কারণে পুলিশ আইন প্রয়োগ করতে গিয়ে মানুষের আক্রমণের শিকার হচ্ছে। নাগরিক সমাজের প্রতি আমার অনুরোধ, পুলিশকে আপনারা আবার কাছে টেনে নিন। পুলিশকে কাজ করতে সহায়তা করেন।”