প্রতীকী ছবি।
প্রথমে একটি প্রাথমিক স্কুলের দখল নেওয়া এবং তার পরে শিশু-সহ বেশ কয়েক জনকে পণবন্দি করে রাখা। ফিলিপিন্সের একটি গ্রামে তেমনই তাণ্ডব চালিয়েছে আইএস-ঘনিষ্ঠ জঙ্গিরা। সেনাদের পাল্টা আক্রমণে অবশ্য অনেক রাতে পণবন্দিদের ফেলে রেখে পালিয়ে যায় জঙ্গিরা।
মারাউই শহর থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম পিগকাওয়াইআন। মারাউইয়ের মতো এখানে এক মাস ধরে আইএস লড়াই চালাচ্ছে, এমন নয়। তবে বুধবার তাদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছে এই গ্রামটিই। এই এলাকার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ক্যাপ্টেন আরভিন এনসিনাস বলেছেন, ‘‘ওরা কয়েক জন সাধারণ নাগরিককে পণবন্দি করে স্কুল দখল করে রেখেছিল। পণবন্দিদেরই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিল ওরা।’’ স্কুলের আশপাশে কিছু বোমাও পুঁতে রাখা হয়েছিল বলে দাবি ওই মুখপাত্রের।
সেনা সূত্রে খবর, ৩১ জনকে পণবন্দি করেছিল জঙ্গিরা। তাদের মধ্যে ১২ জন স্কুলপড়ুয়া। সেনা মুখপাত্র রেস্তিতুতো পাদিল্লা জানান, এই জঙ্গিরা বাংসামোরো ইসলামিক ফ্রিডম ফাইটারস (বিআইএফএফ)-এর সদস্য। দক্ষিণ ফিলিপিন্সে যে চারটি গোষ্ঠী আইএসের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করেছে, বিআইএফএফ তার মধ্যে অন্যতম। তবে এত দূরের গ্রামের স্কুলে হঠাৎ হানা কেন? স্থানীয় পুলিশ মনে করছে, মারাউইয়ে জঙ্গিদের সাহায্য করতে বিআইএফএফ এখানে হামলা চালিয়েছে। কারণ তাতে মারাউই থেকে সেনাবাহিনীর নজর সরে যাবে এই গ্রামের দিকে।
পাদিল্লার দাবি, জঙ্গিরা সকালে একটি সেনাছাউনিতে হানা দেয়। সেটিতে সেনার সংখ্যা কম জেনেই কয়েকশো বন্দুকবাজ প্রথমে সেখানে ছিল। সেনার সঙ্গে গুলি বিনিময়ও হয়েছে। তখনকার মতো পাদিল্লা জানিয়ে দেন, জঙ্গিদের কাবু করা গিয়েছে। তার ছ’ঘণ্টা পরে ক্যাপ্টেন এনসিনাস জানান, ৩০ জন জঙ্গি দখল নিয়েছে স্কুলের। সারা দিন ধরেই পিগকাওয়াইআনের আশপাশে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলেছে। তার পর অনেক রাতে সেনার সঙ্গে মোকাবিলা না করতে পেরে পণবন্দিদের ফেলে রেখে এলাকা ছেড়ে পালায় জঙ্গিরা। কোনও পণবন্দি হতাহত হয়নি। সেনা-জঙ্গি গুলি বিনিময়ের মাঝখানে আটকে পড়েন জনা কুড়ি সাধারণ মানুষ। তাঁদেরও উদ্ধার করা গিয়েছে।
ফিলিপিন্সের দক্ষিণে কট্টর মুসলিম জঙ্গিরা স্বশাসিত এলাকার দাবিতে গত চার দশক ধরে লড়াই চালাচ্ছে। তাতে প্রাণ গিয়েছে অন্তত এক লক্ষ কুড়ি হাজার মানুষের।