আমেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো। —ফাইল চিত্র।
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক আগেই ভারত সফরে আসছেন আমেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো। দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যখন বহু সমস্যা-সঙ্কুলিত, তখন আমেরিকার বিদেশ সচিবের সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে সাউথ ব্লক। ভারত সফর নিয়ে পম্পেয়ো জানিয়েছে, ‘অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ’ এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। ভারত-মার্কিন ‘শুল্ক যুদ্ধ’-এর আবহে নয়াদিল্লি পম্পেয়ো-আগমনের ফায়দা তুলতে চেষ্টার ত্রুটি রাখবে না বলে সূত্রের খবর।
জাপানের ওসাকায় আগামী ২৮-২৯ জুন জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন হবে। তার ঠিক আগেই আগামী ২৪ জুন ভারতের উদ্দেশে রওনা হবেন পম্পেয়ো। গত কাল তিনি জানিয়েছেন, নয়াদিল্লিতে আসার আগে তিনি ভারত-মার্কিন বাণিজ্য কাউন্সিলের সম্মেলনে বক্তৃতা করবেন। তিনি বলেন, ‘‘ভারত সফরের লক্ষ্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। দুই দেশই তাদের অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে বদ্ধপরিকর।’’
সূত্রের খবর, পম্পেয়োর সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই দেখছে নয়াদিল্লি। কারণ, নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় ইনিংসে বিদেশনীতির ক্ষেত্রে প্রথম এবং প্রধান চ্যালেঞ্জ আমেরিকা। বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যে গতিতে গত কয়েক বছর ধরে এগোচ্ছিল, তা মোটের উপর অক্ষুণ্ণই রয়েছে। চিনের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক। সীমান্তে বড় ধরনের কোনও সমস্যা নেই। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ঝড়ঝাপ্টা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। বরং নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্কে উন্নতির জন্য ইসলামাবাদ বাড়তি উৎসাহ দেখাচ্ছে। ফলে চালকের আসনে নয়াদিল্লি। কিন্তু সমস্যা আমেরিকাকে নিয়ে। গত কয়েক মাস ধরে প্রেডিসেন্ট ট্রাম্প একের পর এক যে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে চাপ বেড়েছে ভারতের। ইরান থেকে তেল আমদানির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ইরান থেকে বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করত ভারত। তা ছাড়া, ইরানের মাধ্যমে পাকিস্তানকে এড়িয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করছে নয়াদিল্লি। রাশিয়ার থেকে অস্ত্র কেনার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আমেরিকা। সম্প্রতি ভারতের উপর থেকে ‘জেনারেইলাজড ট্রেডিং প্রেফারেন্স’-এর সুবিধা প্রত্যাহার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। যা মোদীর সরকারের কাছে নিঃসন্দেহে দুঃসংবাদ। ট্রাম্পের ওই সিদ্ধান্তের ফলে কার্যত ‘শুল্ক-যুদ্ধ’ শুরু হয়ে গিয়েছে।
সাউথ ব্লকের একাংশের মতে, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠকে বসতে পারেন মোদী এবং ট্রাম্প। সেখানে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তার আগে পম্পেয়োর সফরে দর কষাকষির করে নিজের দাবিগুলি আদায়ে চেষ্টা ত্রুটি রাখবেন না বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।