মিহির মেটকর।
আমেরিকায় যে কোভিড টিকাগুলি দেওয়া হচ্ছে, তার অন্যতম মডার্নার ভ্যাকসিন। সম্প্রতি তার পেটেন্টের নথি প্রকাশ্যে আসতেই চমক! জানা গিয়েছে, এই টিকা তৈরির পিছনে প্রধান হোতা এক ভারতীয় তরুণ। নাম মিহির মেটকর।
আমেরিকার সেন্টারস ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল (সিডিসি)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ পর্যন্ত মডার্নার টিকার ১৬ কোটি ৪০ লক্ষ ডোজ় দেওয়া হয়েছে আমেরিকায়। এর বাইরেও কোটি কোটি ডোজ় দেওয়া হয়েছে ইউরোপ ও অন্য দেশগুলোতে। কিন্তু এতেও যে কোনও ভারতীয়ের ভূমিকা রয়েছে, তা জানা যায়নি। মডার্নার নথিতে মিহিরের নামের পাশে লেখা ‘ফার্স্ট নেমড ইনভেনটর’। সাধারণত কোনও আবিষ্কারের পিছনে যাঁর প্রধান অবদান, তাঁকেই এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। পেটেন্টের নথি থেকে তাই স্পষ্ট, এই আরএনএ ভ্যাকসিনের প্রযুক্তির অন্যতম আবিষ্কর্তা মিহির।
নতুন প্রজন্মের এই টিকা মেসেঞ্জার আরএনএ (এম-আরএনএ)-র সাহায্যে তৈরি। টিকাটি দেওয়া হলে এম-আরএনএ শরীরে ঢুকে কিছু প্রোটিন তৈরি করে। যা কোভিড সংক্রমণ হলে তৈরি হয়। এই প্রোটিন শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে সক্রিয় করে। এই ধরনের এম-আরএনএ টিকাকে আধুনিক প্রতিষেধক ধরা হয়, কারণ আগে সাধারণত টিকা তৈরিতে মৃত ভাইরাস বা তার অংশ ব্যবহার করা হত।
মডার্নার আধুনিক টিকাটি তৈরির সর্বাগ্রে রয়েছেন মিহির। পুণে থেকে পড়াশোনা মিহিরের। সাবিত্রীবাই ফুলে পুণে ইউনিভার্সিটির ‘ইনস্টিটিউট অব বায়োইনফর্মেটিক্স অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি’ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেছিলেন মিহির। তার পরে তিনি পুণের ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ’ (আইআইএসইআর)-এ প্রজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তী কালে রচেস্টারে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস মেডিক্যাল স্কুলের আরএনএ থেরাপিউটিক্স ইনস্টিটিউট থেকে পিএইচডি করেছেন মিহির। ২০১৮ সালে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা মডার্নায় যোগ দেন ভারতীয় গবেষক।
মেধাসত্ত্ব আইনে নিজেদের টিকার পেটেন্টের জন্য আবেদন জানিয়েছে মডার্না। তাতে ‘ফার্স্ট নেমড ইনভেন্টর’ হিসেবে মিহিরের নাম লেখা হয়েছে। ভারতের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এ দিন অভিনন্দন জানিয়েছেন মিহির মেটকরকে। উত্তরে মিহির বলেন, ‘‘কোভিড সংক্রমণ রোখার কর্মযজ্ঞে শামিল হতে পেরে আমি আনন্দিত।’’