হারলিন কউর গ্রেওয়াল
দাউদাউ করে জ্বলছে রাস্তার ধারে ভেঙেচুরে পড়ে থাকা গাড়িটা। কোনও মতে তা থেকে বেরিয়েই ছুটতে শুরু করে চালক। আর তার পর রাস্তা থেকে একটা ক্যাব ধরে ধাঁ। এ দৃশ্য দেখেছিলেন পথচলতি কেউ কেউ।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পুলিশ-দমকল। আর তার পর আগুন নেভাতে গিয়ে গাড়ির পিছনের আসন থেকে এক তরুণীর অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার করলেন দমকল কর্মীরা। অভিযোগ, বছর পঁচিশের ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণী হারলিন কউর গ্রেওয়ালকে জ্বলন্ত গাড়িতে ফেলে রেখেই পালান চালক সইদ আহমেদ। গাড়ির মধ্যেই পুড়ে মৃত্যু হয়েছে তরুণীর। ২৩ বছরের ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ব্রুকলিন-কুইনস এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যাওয়ার সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কংক্রিটের দেওয়ালে ধাক্কা মারে সইদ। স্থানীয় একটি টিভি চ্যানেলের পাওয়া ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে পালাচ্ছে সে। লোকটির তখনও জামা গুঁজে পরা। জ্বলন্ত গাড়িটির পাশ দিয়ে ছুটে যাওয়া একটা ট্যাক্সিকে দাঁড় করিয়ে উঠে পড়ল সে। সেই গাড়িতে করেই স্থানীয় হাসপাতালে যান আহমেদ। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সইদের বিরুদ্ধে হত্যা, অপরাধমূলক গাফিলতির ফলে প্রাণহানি, দুর্ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশের জেরায় ফ্ল্যাটল্যান্ডের বাসিন্দা সইদ জানিয়েছেন, ওই রাতে তিনি সামান্যই মদ্যপান করেছিলেন। যদিও রক্তপরীক্ষায় তা ধরা পড়েনি। সেই সঙ্গে সে যে হারলিনকে বাঁচানোর এতটুকু চেষ্টা করেছিল, সেই প্রমাণও মেলেনি। সইদের এমন ‘নিষ্ঠুর’ আচরণ নিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি মুখ খুললেও, সইদের ভাই ওয়াহিদের দাবি, সহযাত্রীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল সইদ। ‘‘ও বলেছে, মেয়েটি গাড়ির মধ্যে আটকে পড়েছিল। সইদ ওঁকে টেনে বের করার চেষ্টা করে। সেই জন্যই ওর হাতদু’টো পুড়ে গিয়েছে।’’
হারলিনের প্রেমিক কর্ণ সিংহ ধিলোঁর কথায়, ‘‘ও সবাইকে খুব সাহায্য করত। লোকের বিপদে-আপদে ঝাঁপিয়ে পড়ত।’’ আর সে-ই বাঁচার একটা সুযোগ, এতটুকু সাহায্য পেল না, আক্ষেপ যাচ্ছে না কর্ণের।