(বাঁ দিকে) মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী জ়মির মুসার সঙ্গে এস জয়শঙ্কর (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
ভারতের সঙ্গে কি মলদ্বীপের সম্পর্ক উন্নতি হচ্ছে? ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে পুরনো উষ্ণতা ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয়েছে মহম্মদ মুইজ্জু সরকার। এ বার ভারতও বাড়িয়ে দিল সাহায্যের হাত। মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী মুসা জ়মির জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার তাঁদের ৪০০ কোটি টাকার বেশি আর্থিক সহয়তা করেছে।
সম্প্রতি ভারত সফরে এসেছিলেন মুসা। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক যে ইতিবাচক, তা আগেই জানিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। এ বার মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল ভারতের প্রশংসা। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে ভারতের আর্থিক সহায়তার কথা জানান। তাঁর কথায়, সোমবারই স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমে পাঁচ কোটি মার্কিন ডলার ট্রেজারি বিল পেয়েছে মলদ্বীপ সরকার।
মুইজ্জু সরকারও ভারতের প্রশংসা করেছে আর্থিক সহায়তার জন্য। মলদ্বীপ সরকারের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘ভারত সরকারের সহায়তায় দেশের অনেক উন্নয়নমূলক প্রকল্প চলছে। সেই সহায়তাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আর্থিক সহায়তা।’’
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে মুইজ্জু মলদ্বীপের শাসনক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মুইজ্জু মন্ত্রিসভার কয়েক জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হওয়ার পরেই চিনের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্ক গড়তে উদ্যোগী হন। চিনপন্থী মুইজ্জু ঘোযণা করেন করেন মলদ্বীপের ভূখণ্ডে কোনও ভারতীয় সেনা থাকবে না। ভারত সরকারকে অনুরোধ করেন সেনা প্রত্যাহারের জন্য। সেই নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর মোদী সরকার মেনে নেয় মুইজ্জুর অনুরোধ। তার পর মলদ্বীপ থেকে ধাপে ধাপে ৭৬ জন সেনাকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়।
ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারকে ১০ মে পর্যন্ত সময়ও বেঁধে দিয়েছিলেন মুইজ্জু। মুইজ্জুর কার্যালয়ের মুখপাত্র হিনা ওয়ালিদ একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, ১০ মে-র আগেই তাঁরাও মলদ্বীপ ছেড়েছেন।
এই আবহেই ভারত সফরে আসেন মলদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী। সচরাচর মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত ব্যক্তি প্রথম বিদেশ সফরেই ভারতে আসেন। কিন্তু মুইজ্জু সেই নিয়ম মানেনি। তিনি প্রথমে তুরস্ক এবং চিন সফরে যান। মলদ্বীপ সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে সে দেশের বিদেশমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “আমরা বিবেচনা করে দেখেছিলাম, আপাতত প্রেসিডেন্টের ভারত সফর অল্প কিছু দিনের জন্য পিছিয়ে দিলেও চলে।” তবে সূত্রের খবর, জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে মুসা জানিয়েছেন, ‘খুব শীঘ্রই’ নয়াদিল্লি সফরে আসতে পারেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু।