বাংলাদেশের রাস্তায় ছাত্র আন্দোলন। ছবি: রয়টার্স, এএফপি।
যাত্রাবাড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। তিন জনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন।
ঢাকার রাস্তায় সোমবার বেলা গড়াতেই জড়ো হতে শুরু করেছেন আন্দোলনকারীরা। হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন। উঠছে সরকার বিরোধী স্লোগান। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে।
মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও চালানো হল বাংলাদেশে। সেনাপ্রধানের ভাষণের আগে ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইলের নেট চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের অশান্তিতে আরও এক জনের মৃত্যু হল। যাত্রাবাড়ি এলাকায় বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। সেখানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। গুলি লেগে এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃতের নাম রাসেল (২৫)। তাঁর মাথায় গুলির আঘাত রয়েছে।
সোমবার সকালে দেশ জুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল হাসিনা সরকার। বেলার দিকে আবার ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট চালু করা হয়েছে। তবে মোবাইলের ইন্টারনেট এখনও বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রথম আলো।
বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ নিজের বক্তব্য জানাবেন তিনি। তার আগে পর্যন্ত জনগণকে ধৈর্য ধরে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন।
কার্ফুর মাঝে লং মার্চের ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ঢাকার রাস্তায় জমায়েত শুরু হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে চলছে সংঘর্ষ। বেশিরভাগ জায়গায় জমায়েত দেখলেই কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে পুলিশ।
ছাত্র আন্দোলনের জেরে অফিস-কাছাড়ির পাশাপাশি বাংলাদেশে কারখানাও বন্ধ। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সাড়ে তিন হাজারের বেশি বস্ত্র কারখানা বন্ধ রয়েছে। দেশের অর্থনীতির দিক থেকে যেগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছে।
সোমবার সকালে লং মার্চে যোগ দিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন কিছু ছাত্রছাত্রী। তাঁদের সরাতে কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে পুলিশ। ব্যবহার করা হয়েছে সাউন্ড গ্রেনেডও।
বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধের নির্দেশ দিল শেখ হাসিনা সরকার। রবিবার পর্যন্ত ফোর জি পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। মোবাইলের ইন্টারনেট চলছিল না। তবে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু ছিল। সোমবার তা-ও বন্ধ করে দেওয়া হল।
বাংলাদেশে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হল ১০১। রবিবার পর্যন্ত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা ছিল ৯৮। প্রথম আলো জানিয়েছে, সোমবার নতুন করে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে।
রবিবার থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে কেবলমাত্র মোবাইলের ইন্টারনেট বন্ধ রয়েছে। চলছে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। ফেসবুক, এক্সের (সাবেক টুইটার) মতো সমাজমাধ্যম ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
ঢাকার রাস্তায় সোমবার সকাল থেকে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি কম। তবে টহল দিচ্ছে পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলারক্ষী বাহিনী।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার সকাল থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা রয়েছে। একে কার্ফু চলছে, তার উপর তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে রাস্তায়।
ছাত্র আন্দোলন সামাল দিতে রবিবারই কার্ফু ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্ফু জারি করেছে দেশ জুড়ে। অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু চলছে। সোমবার থেকে তিন দিনের ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাঝে আন্দোলনকারীদের লং মার্চের ডাক নতুন করে অশান্তির জন্ম দিতে পারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ রবিবার একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে খুন করা হয়েছে। এর জবাব দেওয়ার সময় এসেছে। সকলকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করার অনুরোধ করছি। যাঁরা পারবেন, ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।’’
‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর তরফে প্রথমে লং মার্চের দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল মঙ্গলবার। রবিবার দেশ জুড়ে উত্তাল পরিস্থিতি এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বহু মৃত্যুর পর কর্মসূচির দিন বদল করা হয়েছে। এক দিন এগিয়ে আনা হয়েছে ‘ঢাকা চলো’।