তালিবানি আতঙ্কের মধ্যে লুকিয়ে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষরা ছবি সৌজন্যে রয়টার্স।
তালিব যোদ্ধাদের হাত থেকে বাঁচতে কাবুলের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। যে কোনও মুহূর্তে মৃত্যুর ভয় পাচ্ছেন। তাঁরা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষরা। বিশ্বের মানবাধিকার কর্মীদের কাছে তাঁদের কাতর আবেদন, ‘‘তালিবান আমাদের মেরে ফেলবে। দয়া করে আমাদের বাঁচান। দেশ থেকে বার করে নিয়ে যান।’’
আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পরে তালিবান জানিয়েছে, মহিলাদের অধিকার রক্ষা করা হবে। কিন্তু এলজিবিটিকিউ অর্থাৎ সমকামী, উভকামী, রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য কোনও বার্তা তারা দেয়নি। তার ফলেই ভয়ে রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের আশঙ্কা, আগের তালিবান শাসনের সময় যেমন সমকামী সম্প্রদায়ের মানুষদের নির্বিচারে খুন করা হয়েছিল, এ বারেও তাই হতে পারে। এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকারের দাবিতে কাজ করা হিলাল (নাম পরিবর্তিত) সংবাদ সংস্থা সিএনএন-কে বলেন, ‘‘তালিবান আমার ভাইকে ভয় দেখিয়েছে। ওরা বলেছে, আমি বাড়ি ফিরলেই আমাকে খুন করা হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষ। সেটা আমাদের দোষ নয়। সেটা কেউ বদলাতেও পারবে না। ওরা কেবল আমাদের মেরে ফেলতে পারবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া রাবিয়া (নাম পরিবর্তিত) জানিয়েছেন, কিছু দিন আগেই তাঁর এক প্রতিবেশী সমকামী যুবককে ধর্ষণ করে খুন করেছে তালিব যোদ্ধারা। রাবিয়া নিজেও সমকামী। তাই তালিবান দখল নেওয়ার পরেই পরিবারের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে গোপন আস্তানায় লুকিয়ে রয়েছেন তিনি।
এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধিকর্তা কিমহালি পাওয়েল জানিয়েছেন, আফগানিস্তান থেকে বিদেশি নাগরিক, সাংবাদিকদের বার করা হলেও এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষদের বার করা যাচ্ছে না। কারণ তাঁদের আলাদা করে চিহ্নিত করা সম্ভব নয়। একমাত্র রাষ্ট্রপুঞ্জ এই বিষয়ে পদক্ষেপ করলেই এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের মানুষদের বার করা যাবে। যত দিন না সেটা হচ্ছে তত দিন আতঙ্কের মধ্যেই তাঁদের লুকিয়ে থাকতে হবে বলে মনে করছেন পাওয়েল।