—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নিন্দুকেরা বলে বাঙালিরা বড্ড আত্মকেন্দ্রিক। গান বাজনা ছাড়া তেমন কিছুই নাকি পারে না। যা হোক, ওই-টুকু তো পারি! তাই বাঙালি পৃথিবীর যে প্রান্তে গেছে, সেখানেই রেখে এসেছে শৈল্পিক ছাপ। পরিপাটি যত্নে গড়ে তুলেছে লক্ষ-কোটি বাংলা, সমগ্র পৃথিবী জুড়েই। ভ্যাঙ্কুভারে বংমিলান্তির মাঝেও আমরা তৈরি করে নিয়েছি বৃহত্তর সোনার বাংলার প্রতিরূপ। গত বছর ছিল ‘বেঙ্গলিস ইন ভ্যাঙ্কুভার’-এর প্রথম দুর্গাপুজো। সেই পুজোতে আশাতীত সাফল্য পেয়ে এই বছর প্রস্তুতি ছিলো তুঙ্গে। দেশ থেকে শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাঁরাও সম্মতি জানান। স্বয়ং কনসুলেট জেনারেল কথা দিলেন তিনিও আসবেন আমাদের পুজোতে। প্রবাসের ব্যস্ত জীবনের হাজার বাধা কাটিয়ে সফল ভাবে তৈরি হয়ে যায় আমাদের পত্রিকার প্রথম সংখ্যা ‘আগমনী’র খসড়াও।
এমন সময়ে হঠাৎ সেই মর্মান্তিক খবর এল। এশিয়ার প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের উত্তরসূরির ভয়াবহ মৃত্যু আমাদের সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে। ভৌগোলিক দূরত্ব যাই থাক, আমরা বুকের ভেতর নিয়ে ফিরি গোটা বাংলা মা-কে। কাজেই হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছেই। হয়েছে প্রতিবাদও। বিশ্ব আজ বুঝেছে, বাঙালি মোটেই আত্মকেন্দ্রিক নয়, বরং নির্ভীক। আমরা সাহিত্যপ্রেমী ঠিকই, কিন্তু দেশপ্রেমিক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুরও উত্তরসূরিও। তাই রক্তে আজও বইছে হার না মানা জেদ। অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদও ঠিক কতটা শান্তিপূর্ণ এবং শৈল্পিক ভাবে করা যায় তা আজ বাঙালিইআবার শেখাচ্ছে।
‘বেঙ্গলিস ইন ভ্যানকুভার’-এর তরফে আমরাও বিশ্বব্যাপী বাঙালিদের মতোই সরব হয়েছি প্রতিবাদে। আমরা যে আলোর পথযাত্রী। তাই আঁধারে শোকে বিহ্বল হয়ে আমরা থেমে থাকছি না। পুজো হবে। আর সেই সঙ্গে সকাতরে শক্তি স্বরূপা মহামায়ার কাছে প্রার্থনা থাকবে ‘অভয়া শক্তি বলপ্রদায়িনী তুমি জাগো, জাগো মা’।