Andrés Manuel López Obrador

মেক্সিকোয় জয় বামপন্থী আন্দ্রেসের

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেন বামপন্থী প্রার্থী আন্দ্রেস

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মেক্সিকো সিটি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৮ ০৫:২৩
Share:

মেক্সিকোয় জয়ী আন্দ্রেস। ছবি: রয়টার্স।

ইঙ্গিতটা ছিলই। সেইমতো মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলেন বামপন্থী প্রার্থী আন্দ্রেস মানুয়েল লোপেজ় ওব্রাডর, নামের আদ্যক্ষর দিয়ে যিনি বেশি পরিচিত ‘আমলো’ বলে। দুর্নীতির বিষ নির্মূল করার বার্তা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন আমলো। মানুষের তীব্র ক্ষোভ ছিল হিংসা নিয়েও। তাই রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের দাবি ক্রমশ জোরালো হচ্ছিল। সরকারি সূত্রে সম্ভাব্য যে ফলের কথা বলা হচ্ছে, তা থেকে স্পষ্ট, ৫৩% ভোট আমলোর ঝুলিতে। বিরোধী মূলস্রোতের দলগুলিতে এত বড় ধস আগে কখনও দেখা যায়নি।

Advertisement

কথাবার্তায় চাঁছাছোলা রুপোলি চুলের মানুষটি বিপুল ভোট পেয়ে রেকর্ড গড়েছেন। এর আগে ২০০৬ সালে ও ২০১২ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়লেও হেরে যান। পরে নিজে তৈরি করেন বামপন্থী ন্যাশনাল রিজেনারেশন মুভমেন্ট পার্টি। এ বছর আরও দুই দলের সঙ্গে জোট করে মাঠে নামেন আন্দ্রেস। মেক্সিকোর আধুনিক ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রার্থী অর্ধেকেরও বেশি ভোট পেয়েছেন। জেতার পরে আন্দ্রেস বলেছেন, ‘‘ঐতিহাসিক দিন এবং স্মরণীয় রাত। সত্যিকারের গণতন্ত্রের জন্য কাজ করব। গোপনে বা প্রকাশ্যে একনায়কত্বের জায়গা থাকবে না।’’ এক শতক দেশ শাসন করে আসা দুই দল, ইনস্টিটিউশনাল রেভলিউশনারি পার্টি ও ন্যাশনাল অ্যাকশন পার্টিকে নিয়ে জনতা এতটাই বিরক্ত ছিল যে আন্দ্রেসের জয়ের পথ মসৃণ হয়েছে।

বছর ৬৪-র আমলো এর আগে মেক্সিকো সিটি-র মেয়র ছিলেন। প্রচারে মুখর ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনায়। মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় পৌঁছনো অভিবাসীদের প্রতি ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছিলেন ট্রাম্প। অভিবাসী শিশুদের তাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার এই নীতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। তাই জিতে আসার পরে ট্রাম্পের সঙ্গে আন্দ্রেসের সমীকরণ কেমন দাঁড়ায়, দেখতে আগ্রহী কূটনীতিকরা। যদিও যে ট্রাম্পের অভিবাসন ও বাণিজ্য নীতি নিয়ে প্রচারে সুর চড়িয়েছিলেন আন্দ্রেস, সেই তিনি জেতার পরে আমেরিকার সঙ্গে ‘বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা’ বাড়ানোর কথা বলেন। টুইটে ট্রাম্পও লিখেছেন, ‘‘আন্দ্রেসকে অভিনন্দন! ওঁর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। অনেক কিছু করতে হবে যাতে মেক্সিকো এবং আমেরিকা, দু’দেশই উপকৃত হয়।’’

Advertisement

বিরোধীদের আশঙ্কা, নয়া প্রেসিডেন্টের বামপন্থী, জনমোহিনী নীতি ইতিমধ্যেই ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিকে আরও পঙ্গু করে তুলবে। তাঁরা বলছেন, ‘‘মেক্সিকো ‘আর একটা ভেনিজ়ুয়েলা’ না হয়ে যায়!’’ দ্রুত হাল ফেরাতে আন্দ্রেসের পাখির চোখ দুর্নীতি-দমন। মাদক পাচার এবং হিংসার অভিযোগে গত বছরই অন্তত ২৫ হাজার মৃত্যুর সাক্ষী এই দেশ। প্রার্থী থেকে দলীয় কর্মী মিলিয়ে ভোটে হিংসার বলি ১৩০ জনেরও বেশি। তাই এ বার থেকে রোজ নিরাপত্তা মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠক করতে চান নয়া প্রেসিডেন্ট। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, বাণিজ্য খাতে রাষ্ট্রায়ত্ত চাপ থাকবে না। বেসরকারিকরণে আস্থা রাখা হবে। শুল্কও বাড়বে না। ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই আন্দ্রেস চান, বয়স্কদের পেনশন দ্বিগুণ করতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement