মাস পাঁচেক আগেই ঘুমিয়ে পড়ার ‘অপরাধে’ প্রাণ খোয়াতে হয়েছিল উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল হিয়ন ইয়ং চোলকে।
এ বার সেই তালিকায় নাম জুড়ল দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রীর। দক্ষিণ কোরিয়ার এক সংবাদ সংস্থার দাবি, গত মে মাসে দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী চো ইয়ং গনকে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে হত্যা করেছে কিম জং উন প্রশাসন। দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি, কিমের সঙ্গে নীতিগত বিরোধিতার কারণেই মরতে হয়েছে চো কে।
৬৩ বছরের প্রবীণ নেতা চো ইয়ং গন গত বছর জুন মাসে উপ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে নিয়েছিলেন। আর কার্যকালের মেয়াদ এক বছর ছোঁয়ার মুখেই সম্ভবত তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে কিম প্রশাসন। অরণ্য সংক্রান্ত যে সব নীতি প্রণয়ন করেছিলেন কিম, তার অনেক কিছুতেই আপত্তি জানিয়েছিলেন চো। দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে খবর, চো-এর আপত্তি স্বাভাবিক ভাবেই মনে ধরেনি একনায়ক শাসক কিমের। তাই উপপ্রধানমন্ত্রীকে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন তিনি। গত বছর ডিসেম্বরে তাঁকে শেষ বার প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল। কিমের বাবা, দ্বিতীয় কিম জং উনের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে। তার পরের আট মাস তাঁকে দেখা যায়নি বলে দাবি।
তবে এই খবরের সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ পরমাণু শক্তিধর দেশ উত্তর কোরিয়া তাদের সব কাজের ক্ষেত্রেই অসম্ভব গোপনীয়তা বজায় রাখে। আর তাই ২০১১ সালে দ্বিতীয় কিম জং উনের মৃত্যুর দু’দিন পরে সেই ঘটনা জানতে পেরেছিল গোটা দুনিয়া। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিয়ন ইয়ং চোলের মৃত্যু নিয়েও টুঁ শব্দ করেনি উত্তর কোরিয়া। সে খবর জানিয়েছিল সোলের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু চোলের জায়গায় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হয় পাক ইয়ং সিক নামে এক ব্যক্তিকে। সোলের ওই গোয়েন্দা সংস্থা সে বার দাবি করেছিল, শুধু মন্ত্রী নন, প্রশাসনের অনেক উচ্চপদস্থ কর্তাকেও একই কায়দায় মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন কিম। বাদ যাননি তাঁর নিজের কাকাও।
উত্তর কোরিয়ার তিরিশ-ছোঁয়া নেতা কিম একাধিকবার সেনা অফিসারদের মধ্যেও রদবদল ঘটিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রত্যেকে যাতে তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে তার জন্যই এই কৌশল নিয়েছেন তরুণ এই শাসক।