প্রতীকী চিত্র।
সুদূর আমেরিকার বস্টনের শহরতলি বার্লিংটন। শ্রী দুর্গা-কালী মন্দিরে ১৮ অক্টোবর গভীর রাতে সম্পন্ন হল শ্যামা পুজো। শ’খানেক বাঙালির উপস্থিতিতে উচ্চৈস্বরে শ্যামা মায়ের মাহাত্ম্য পাঠ করেন মন্দিরের পুরোহিত ভবানী তেজস্বী। সঙ্গে ঢাকের আওয়াজ, কাঁসর ঘণ্টা, শঙ্খ আর মহিলাদের সমবেত কণ্ঠের উলুধ্বনিতে মনেই হয়নি এই পুজো হচ্ছে দেশের বাইরে কোথাও। সবশেষে ওয়াইনের চরণামৃত আর লেমন রাইসের প্রসাদে সকলকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে বিদায় নেওয়া।
বস্টনে আমাদের সব পুজোই হয় সপ্তাহান্তে। তার প্রধান কারণ, এখনও আমাদের নিজস্ব কোনও পুজোর জায়গা নেই। কোনও একটা স্কুলবাড়ি ভাড়া নিয়েই আয়োজন করতে হয় পুজোর। যা সম্ভব একমাত্র সপ্তাহান্তেই।
বস্টনের প্রাচীন বাঙালি ক্লাবগুলোর মধ্যে একমাত্র আমাদের ক্লাব, মানে বাংলা ও বিশ্ব ২২ বছর শ্যামা পুজোর আয়োজন করে আসছে। তবে গত ১০-১২ বছর আমাদের পাশের রাজ্য নিউ হ্যাম্পশায়ারেও কালীপুজো হয়। তাই বস্টনের অনেক বাঙালিই এই সময় ম্যাসাচুসেটস থেকে নিউ হ্যাম্পশায়ারে চলে যান। কারণ ম্যাসাচুসেটসে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ হলেও নিউ হ্যাম্পশায়ারে পুজোর অন্যতম আকর্ষণ বাজির রোশনাই।
বাংলা ও বিশ্বের কালীপুজোর ঐতিহ্য ধরে রেখেছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতি বছরই নাটক পরিবেশন করেন সদস্যরা। এ বারের নাটক ছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ‘বাড়ি কার’। পরিচালনা, অভিনয় সব কিছুই করে থাকেন স্থানীয় শিল্পীরা। এ ছাড়াও ছিল ভক্তিমূলক ও অন্যান্য গানের আসর।
আর খাওয়া দাওয়া? যেটা ছাড়া তো বাঙালির পুজোই অসম্পূর্ণ। পুজোর ফল, মিষ্টি, দধিকর্মার পাশাপাশি ঝালমুড়ি, চা, জলখাবার দিয়ে শুরু করে ভাত, পাঁঠার মাংস, সর্ষেবাটা দিয়ে তেলাপিয়ার পাতুরি আর শেষপাতে গোলাপ জামে জমে উঠেছিল পুজোর ভোজ।