প্রতীকী ছবি।
অন্য টিকার মত দু’টি নয়। তাদের তৈরি একটি মাত্র টিকা প্রয়োগ করলেই মানবদেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে উঠবে বলে কয়েক মাস আগেই দাবি করেছিল ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা জনসন অ্যান্ড জনসন। তৃতীয় দফায় মানবদেহে পরীক্ষার (হিউম্যান ক্লিনিক্ল্যাল ট্রায়াল) ফল বলছে, আমেরিকায় ৭২ শতাংশ ক্ষেত্রে সেই টিকা ‘কার্যকর’ প্রমাণিত হয়েছে বলে শুক্রবার সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। তবে বিশ্বের তিন মহাদেশে পরীক্ষায় টিকার সাফল্যের হার ৬০ শতাংশের কিছুটা বেশি।
আমেরিকার পাশাপাশি দক্ষিণ আমেরিকা এবং আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় ৪৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের দেহে জনসনের টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল। দক্ষিণ আমেরিকায় ৬৬ শতাংশ এবং আফ্রিকায় ৫৭ শতাংশ ক্ষেত্রে এই টিকার কার্যকরিতা প্রমাণিত হয়েছে বলে সংস্থার দাবি। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ আফ্রিকাতে দেখা মিলেছে করোনাভাইরাসের নয়া অতিসংক্রামক একটি রূপের। জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও তুলনায় অনেক কম বলে তৃতীয় পরীক্ষার রিপোর্টে জানা গিয়েছে। যদিও অক্সফোর্ড, ফাইজার বা মর্ডানার টিকার ‘সাফল্যের হার’ জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার তুলনায় কিছুটা বেশি।
জনসন অ্যান্ড জনসনের বিজ্ঞানী দলের প্রধান পল স্টফেলস জানান, গুরুতর সংক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে তাঁদের টিকা ৮৫ শতাংশ কার্যকরী। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম বা আনুষঙ্গিক শারীরিক সমস্যা (কো-মর্বিডিটি) রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দু’টি টিকা দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। আমাদের বিশ্বাস, সামগ্রিক ভাবে এই টিকা বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষকে কোভিড-১৯-এর মারাত্মক পরিণাম থেকে রক্ষা করতে পারবে।’’
আমেরিকা এবং ইউরোপের পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ভারতেও এই টিকা তৈরি হবে বলে বহুজাতিক ওষুধ নির্মাতা সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য আগামী সপ্তাহেই আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ থেকে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পাওয়া যাবে বলে সংস্থার আশা। তাদের লক্ষ্য চলতি বছরের মধ্যে অন্তত ১০০ কোটি টিকা উৎপাদন এবং সরবরাহ করা।
জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি করোনা টিকার নাম এডি২৬.কোভ২.এস। গত জুলাই মাসে প্রথমে একদল হনুমানের উপর ওই প্রতিষেধক পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হয়। তাতে দেখা যায়, করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছে সেটি। তার পরেই আমেরিকা সরকারের অনুমোদনে ১ হাজার প্রাপ্তবয়স্কের উপর প্রাথমিক পর্যায়ে সেটির প্রয়োগ শুরু হয়েছিল।