দূর থেকে দেখলে মনে হয় সমুদ্রের মাঝে একটা সামরিক জাহাজ যাচ্ছে।কিন্তু আসলে তা নয়। তাহলে এটা কী?
বিশ্বের ৫০৫টি জনমানবহীন দ্বীপের অন্যতম হাশিমা দ্বীপ। নাগাসাকি থেকে ১৫ কিমি দূরে জাপানের এই দ্বীপকে গানকানজিমা নামে ডাকা হয়। যার অর্থ সামরিক বাহিনীর জাহাজ।
দ্বীপে অট্টালিকাগুলি এমনভাবে নির্মাণ করা হয়, দূর থেকে দেখে মনে হত সমুদ্রে নোঙর করে আছে বিশাল যুদ্ধ জাহাজ।একমাত্র রোমে তৈরি কংক্রিটের বাড়িই টেক্কা দিতে পারে বাড়িগুলিকে।
টাইফুনের হাত থেকে বাঁচানোর মতো করেই দ্বীপটি তৈরি করা হয়েছিল। দায়িত্বে ছিল মিৎসুবিশি।প্রাকৃতিক দুর্যোগকে জয় করে এখনও বেশ কিছু ভগ্নাংশ রয়ে গিয়েছে এই পরিত্যক্ত দ্বীপে।
সম্প্রতি নেটফ্লিক্সের ‘ডার্ক ট্যুরিস্ট’ ওয়েব সিরিজে এই ফাঁকা দ্বীপ নিয়ে একটি শো করেছেন ডেভিড ফেরিয়ার নামে নিউজিল্যান্ডের এক সাংবাদিক। এরপর এটি নিয়ে উৎসাহ তৈরি হয়।
টাইফুনের হাত থেকে বাঁচানোর মতো করেই দ্বীপটি তৈরি করা হয়েছিল। দায়িত্বে ছিল মিৎসুবিশি। কোরিয়ার গবেষকদের অনেকেই বলছেন, জাপানের তরফে দ্বীপে কর্মরত কোরীয় শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের কথাও নাকি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে অনেক বার।
২০০৯ সালে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল এটি। জেমস বন্ডের ‘স্কাইফল’-সহ বেশ কয়েকটি ছবির শুটিং হয়েছে হাশিমা দ্বীপে।তবে খুব অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরাই এই দ্বীপে বেড়াতে আসেন।
১৯৭০ সাল নাগাদও কয়লাখনিসমৃদ্ধ এই দ্বীপে বাস করতেন প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দা। তবে ১৯৭৪ সাল নাগাদ খনিটি বন্ধ হয়ে যায়। ফাঁকা হতে থাকে দ্বীপ। ২০১৫ সালে এটিকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণা করা হয়।
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক তাকাফুমি নোগুচি এই দ্বীপের বাড়িগুলি সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছেন। পরিত্যক্ত দ্বীপের বাড়িগুলিকে রক্ষা করতে চাইছেন তিনি। শুরু হয়েছে গবেষণাও।
এই দ্বীপ নিয়ে তৈরি একটি বিজ্ঞাপন নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে একটানা সম্প্রচারিত হয় ২০১৭ সালের জুলাইয়ে। সেখানে জাপানের শিল্প বিপ্লব এবং সেই প্রেক্ষিতে কোরীয় শ্রমিকদের ওই দ্বীপে জোর করে ধরে নিয়ে আসার কথা বলেন দক্ষিণ কোরিয়ার সাংশিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিয়ং দুক। নির্জন এই হাশিমা দ্বীপ নিয়ে আরও উৎসাহ বাড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরাও কথা বলতে থাকেন।