বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। -ফাইল ছবি।
সরাসরি পাকিস্তানের নামোল্লেখ করলেন না। কিন্তু ‘সার্ক’ জোটে কিছু সমস্যা রয়েছে’ বলে সন্ত্রাসবাদকে ইসলামাবাদের মদত দিয়ে চলার ‘পথ’কেই ইঙ্গিত করলেন ভারতের নতুন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘শুধুই সীমান্তপার সন্ত্রাস নয়, ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্ক ও পারস্পরিক যোগাযোগব্যবস্থা নিয়ে ওই জোটে কিছু সমস্যা রয়েছে।’’
জয়শঙ্কর এও জানালেন, দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দ্বিতীয় এনডিএ মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ না জানানোর পদক্ষেপ করে একটি সঙ্কেত (সিগন্যাল) দেওয়া হয়েছে ইসলামাবাদকে। প্রথম মোদী মন্ত্রিসভার শপথ অনু্ষ্ঠানের মতো এ বার ৮ সদস্যের সার্ক জোটের রাষ্ট্রনেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তার পরিবর্তে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ৭ সদস্যের ‘বিমস্টেক’ জোটের রাষ্ট্রপ্রধানদের। বোঝাতে চাইলেন, সেই ‘সমস্যা রয়েছে’ বলেই এ বার সার্ক জোটের সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে না ডেকে প্রতিবেশী বিমস্টেক জোটের দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাঁর পূর্বসূরী সুষমা স্বরাজ বিদেশমন্ত্রী হয়ে যে ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন মন্ত্রককে, কৃতজ্ঞচিত্তে তারও উল্লেখ করেন নতুন বিদেশমন্ত্রী।
বিদেশমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পর দিল্লিতে এই প্রথম একটি আলোচনাসভায় এই কথা বলেছেন জয়শঙ্কর। কেন পাকিস্তানকে ডাকা হয়নি, তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জয়শঙ্কর রীতিমতো কূটনীতিকের সুরেই বলেছেন, ‘‘সার্ক জোটের সদস্য পাকিস্তানকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান তো আর বিমস্টেক জোটের সদস্য নয়।’’
আরও পড়ুন- ‘আমরা কথা রেখেছি, ইদ মুবারক’, পাক কর্তার ফোন ইন্ডিগোর দফতরে
আরও পড়ুন- রাজনীতি বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি থেকে বাদ রাজনাথ, অমিত ৮টিতেই
প্রতিবেশীদের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের হাল ফেরাতে উত্তরোত্তর শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠা ভারত কী করতে পারে, তারও উল্লেখ করেছেন বিদেশমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘(দক্ষিণ এশিয়ার) দেশগুলির মধ্যে আমাদের অর্থনীতিই বৃহত্তম। আমাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব প্রতিবেশীদের উন্নয়ন ঘটানো। যাতে আমাদের অর্থনীতির বৃদ্ধি ও বিকাশ প্রতিবেশী দেশগুলির অর্থনৈতিক উন্নয়নেও জোয়ার আনতে পারে।’’
জয়শঙ্করের মতে, বিশ্বের অর্থনৈতিক ভারসাম্যে কিছু রদবদল ঘটেছে (গ্লোবাল রিব্যালান্সিং)। তার সবচেয়ে বেশি প্রতিফলন ঘটেছে চিনে। ভারতেও কিছুটা। নতুন বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্য, সেই পরিবর্তনটা ভারতবাসী বুঝতে পেরেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতের বেশির ভাগ মানুষ বুঝতে পেরেছেন, গত ৫ বছরে বিশ্বে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।’’
জাতীয়তাবাদের বিকাশও যে এশিয়ায় লক্ষ্যণীয়, সে কথাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘এশিয়ায় জাতীয়তাবাদের উপর মানুষ আস্থা রেখেছেন। কিন্তু নানা কারণে বিশ্বের বেশ কয়েকটি জায়গায় জাতীয়তাবাদ এখনও ধারণা হিসাবেই রয়েছে, কিছু কিছু জায়গায় তা সরকারি ভাবে সবে অনুমোদন পেয়েছে। যা সেই সব দেশে ভোট প্রক্রিয়া ও তার ফলাফল থেকেই বোঝা যায়।’’