জাইর বোলসোনারো।
বোলসোনারো সরকারের ‘আত্মহত্যা’ আটকাতে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে চাইছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ।
এ সপ্তাহে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ফ্রান্সে এসেছেন বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারা। শীর্ষ বৈঠকে দাবানল নিয়ে বিশেষ আলোচনার ডাক দিয়েছেন মাকরঁ। শীর্ষ সম্মেলনের প্রথম দিনেই তিনি টুইট করেন, ‘‘আমাদের ঘর পুড়ছে। এটা একটা আন্তর্জাতিক সঙ্কট। এখনই কিছু করা দরকার।’’
তবে ইউরোপের সব দেশই ব্রাজিলের পরিস্থিতি নিয়ে সমান উদ্বিগ্ন ও প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোকে চাপে রাখতে পদক্ষেপ করবে, এতটা আশাবাদী হচ্ছেন না পরিবেশবিদেরা। বোলসোনারোর বিভিন্ন পরিবেশ-বিরোধী পদক্ষেপে হতাশ নরওয়ে ও জার্মানি অবশ্য ইতিমধ্যেই ব্রাজিলের আমাজন তহবিলে অনুদান পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। ব্রাজিল বৃষ্টি-বনানীর আগুন আয়ত্তে না আনতে পারলে তাদের সঙ্গে বাণিজ্য-চুক্তিতে রাশ টানবেন বলে জানিয়েছেন আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীও। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি ব্রাজিলের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে। ব্রিটেনও ইঙ্গিত দিয়েছেন, ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে বাণিজ্য সহযোগী হিসেবে ব্রাজিলকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেবে তারা। বুধবারই ব্রাসিলিয়ায় সে দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী কোনর বার্নস। দাবানল সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে বার্নস শুধু বলেন, ‘‘দেশের মানুষকে সমৃদ্ধ করতে বোলসোনারোর সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। এই ইচ্ছা তো আইনবিরুদ্ধ নয়।’’
একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ব্রাজিলের নব্বই শতাংশ মানুষ বৃষ্টি-বনানী রক্ষা করতে চান। কিন্তু বোলসোনারো সরকার সে সব কথায় কান দিতে নারাজ। সারা পৃথিবী আতঙ্কিত হলেও এই সপ্তাহেই প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছেন, থমকে যাওয়া মেগা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। পরিবেশবিদদের চাপে স্থগিত ছিল সেই কাজ। সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক কার্লোস নোব্রের কথায়, ‘‘ব্রাজিলের রাজনীতিকরা দেশের মানুষের কথায় পাত্তা দেন না। তবে আন্তর্জাতিক চাপের কাছে অনেক সময়ে মাথা নোয়ান তাঁরা। সরকার সব সময়ে ভয়ে থাকে যে ইউরোপ তাদের থেকে আনাজ ও মাংস কেনা বন্ধ করে দেবে। সেই পথ দিয়ে ব্রাজিলকে চাপ দিলে কিছু কাজ হতে পারে।’’
বৃষ্টি-বনানীর কিছুটা ব্রাজিলের প্রতিবেশী বলিভিয়ার মধ্যেও পড়েছে। সেখানকার প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস জানিয়েছেন, সুপার ট্যাঙ্কার বোয়িং বিমান থেকে জল দিয়ে দাবানল নেভানোর চেষ্টা করা হবে।