হাফিজ সইদ। ফাইল চিত্র
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে নড়ে বসতে বাধ্য হল পাকিস্তান। সন্ত্রাসে আর্থিক মদতের মামলায় পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার প্রধান হাফিজ সইদকে আজ সাড়ে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিল লাহৌরের সন্ত্রাস-দমন আদালত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের একটা অংশ অবশ্য একে নিছক ‘লোক দেখানো’ বলেই মনে করছে। ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) সঙ্গে চার দিন পরেই প্যারিসে বৈঠক রয়েছে পাকিস্তানের। ‘ধূসর তালিকা’ থেকে নিজেদের নাম সরাতে মরিয়া পাকিস্তান তাই হাফিজকে তাড়িঘড়ি জেলে পাঠাল বলে মনে করছেন অনেকে। একই সাজা হয়েছে হাফিজ-সঙ্গী জাফর ইকবালেরও।
পঞ্জাব পুলিশের সন্ত্রাস-দমন বিভাগের আর্জিতে লাহৌর এবং গুজরানওয়ালা শহরে দায়ের হওয়া মামলা দু’টিতে আদতে সাড়ে পাঁচ বছর করে মোট ১১ বছরের জেল হয়েছে হাফিজের। সঙ্গে মামলা-পিছু ১৫ হাজার টাকা জরিমানা। কিন্তু সাজা একই সঙ্গে চলবে বলে তা সাড়ে পাঁচ বছরই দাঁড়াচ্ছে বলে জানান বিচারপতি আরশাদ হুসেন ভুট্টো। সন্ত্রাসদমন আইনের বিভিন্ন ধারায় গত বছর ডিসেম্বরে হাফিজের বিরুদ্ধে ছ’টি মামলা দায়ের হয়েছে। সবেতেই সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগ। হাফিজের আর্জি ছিল, ছ’টি মামলাকে একত্রে এনে রায় দেওয়া হোক চূড়ান্ত শুনানি শেষে। মঙ্গলবার তার সেই আর্জিও মেনে নিয়েছিল লাহৌরের আদালত। তার পরেও আজ যে তারা সাজা শোনাল, সেটার লক্ষ্য এফএটিএফ বৈঠক বলেই মনে করা হচ্ছে।
অনেকেই বলছেন, সবটাই এফএটিএফের খাঁড়া এড়াতে। লস্কর, জইশের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীকে ঠেকাতে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সরকার কার্যত হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে— এই অভিযোগে গত বছর অক্টোবরে পাকিস্তানকে ‘ধূসর’ তালিকাভুক্ত করে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের সমর্থনপুষ্ট আন্তর্জাতিক ওয়াচডগ সংস্থা এফএটিএফ। আগামী এপ্রিলের মধ্যে এই তালিকা থেকে বেরোতে না-পারলে পাকিস্তান ‘কালো’ তালিকাভুক্ত হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইরানের মতো তাদের উপরেও নানা অার্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপতে পারে।