গাজ়ায় আশ্রয়হীন মহিলা, শিশু। —ফাইল চিত্র।
গাজ়ার বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফাতে ঢুকে পড়ল ইজ়রায়েলি ফৌজ। হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে তারা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছিল। দাবি, অস্ত্রশস্ত্র ফেলে দেওয়ার আদেশ মানেননি হাসপাতালে লুকিয়ে থাকা হামাসের সদস্যেরা। সেই কারণেই এ বার হাসপাতালের মধ্যে ঢুকে তাঁদের উপর হামলা শুরু হয়েছে। ইজ়রায়েলের অভিযোগ, হাসপাতালকেই ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে হামাস। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকেই।
রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য বলছে, আল-শিফা হাসপাতালে এই মুহূর্তে অন্তত ২,৩০০ জন রোগী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে বহু শিশুও। প্যালেস্টাইনের সাধারণ নাগরিকেরাও কেউ কেউ যুদ্ধ চলাকালীন সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ইজ়রায়েলের হামলায় আতঙ্কে সিঁটিয়ে আছেন তাঁরা।
ইজ়রায়েলি ফৌজ জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে তারা হামাসের বিরুদ্ধে নিয়ন্ত্রিত হামলা চালাচ্ছে। কেবল হামাসের সদস্যদেরই ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে। একটি বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর সেনা জানায়, গাজ়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ওই হাসপাতালে আক্রমণের বিষয়ে আগেই তারা সতর্ক করেছিল। বলা হয়েছিল, ১২ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের সামরিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। হামাসের সদস্যদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। কিন্তু তা করা হয়নি।
১২ ঘণ্টার সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরেই হাসপাতালে ঢুকে পড়ে ইজ়রায়েলি বাহিনী। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, ওই হাসপাতালে ৩৬ জন সদ্যোজাতের চিকিৎসা চলছে। তাদের হাসপাতাল থেকে সরানো সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়াও অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে তিন জন সদ্যোজাতের মৃত্যুও হয়েছে। আল-শিফা হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। জ্বালানির অভাবে জেনারেটরও চালানো যাচ্ছে না।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালের ভিতরে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের সৎকারের পরিস্থিতিও নেই। পচা মৃতদেহের গন্ধে টেকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় দেহ মর্গে সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। যেখানে সেখানে মৃতদেহ ছড়িয়ে রয়েছে।
আল-শিফা হাসপাতালে ইজ়রায়েলের হামলার জন্য নেতানিয়াহু এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেছে হামাস। তারা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই হামলার নেপথ্যে রয়েছেন বাইডেন। হাসপাতালে ইজ়রায়েলের এই হামলা আন্তর্জাতিক মহলে আরও সমালোচনা ডেকে আনতে পারে। রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে শুরু করে শান্তিকামী বিভিন্ন মহল ইজ়রায়েলকে যুদ্ধবিরতির আবেদন জানিয়েছে। হাসপাতালে আক্রমণের বিরোধিতা করা হয়েছে বার বার।