রাফা ছাড়ছেন প্যালেস্টাইনিরা। ছবি: রয়টার্স।
গাজ়া ভূখণ্ডের দক্ষিণে প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের শেষ আশ্রয়স্থল রাফায় বড় অংশের দখল নিল ইজ়রায়েলি সেনা। সেই সঙ্গে বুধবার রাতে রাফার মিশর সীমান্তও কবজা করেছে ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সেনা। যদিও রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের যুদ্ধবিরতির ‘পরামর্শ’ খারিজ করে তেল আভিব জানিয়েছে, প্যালেস্টাইনিদের ভূখণ্ডে এখনও মাস সাতেক লড়াই চলতে পারে।
অক্টোবরে ৭ তারিখে হামাসের হামলার জবাব দিতে গিয়ে প্রথমে বন্দুকের নলের সামনে রেখে উত্তর গাজ়া ফাঁকা করিয়েছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। একে একে মধ্য ভূখণ্ডও গ্রাস করেছে তারা। ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, ধূলিসাৎ করেছে সব। তার পর টানা হামলা চলেছে দক্ষিণে, খান ইউনিসে। এর পর ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নিশানা গাজ়া ভূখণ্ডের একেবারে দক্ষিণপ্রান্ত রাফা। প্রাণ বাঁচাতে রাফা সীমান্তে জড়ো হওয়া প্যালেস্টাইনি নাগরিকদের উপরে সোমবার নির্বিচারে গুলি এবং বোমাবর্ষণ করে ইজ়রায়েলি সেনা এবং বিমানবাহিনী।
সে সময় নারী এবং শিশু-সহ প্রায় ৫০ জন প্যালেস্টাইনির পাশাপাশি এক মিশরীয় সেনাও নিহত হন। পাল্টা গুলি চালায় মিশরের সেনা। তেল আভিব-কায়রো দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বুধবার রাফা সীমান্তে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হলেও ইজ়রায়েলি ফৌজ ওই এলাকা দখল নেওয়ায় আবার অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইজ়রায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)-র মুখপাত্র ড্যানিয়েল হগারি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কৌশলগত পদক্ষেপ হিসাবেই গাজ়া-মিশর সীমান্তবর্তী ১৪ কিলোমিটার ‘ফিলাডেলফি করিডর’-এর নিয়ন্ত্রণ আমরা হাতে নিয়েছি।’’
গত ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েল-হামাস সংঘাত শুরু হওয়ার পর বেশ কিছু দিন রাফা সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল মিশর। মিশর প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল যে, সীমান্তের দরজা খুলে দেওয়া হলে প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সদস্যরা ইজ়রায়েলি হানা থেকে রক্ষা পেতে তাদের দেশে এসে আশ্রয় নেবেন। পরে যদিও গাজ়ায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য নিয়ন্ত্রিত ভাবে সীমান্তের দরজা খুলেছিল মিশর। গত ৬ মে থেকে রাফায় ইজ়রায়েল ফৌজ ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ শুরুর পরে সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানি এড়াতে কায়রোর কাছে প্যালেস্টাইনি সংগঠনগুলি সীমান্ত খোলার আবেদন জানিয়েছিল। এ বার সেই পথ কি বন্ধ করতে চাইছে ইজ়রায়েল?