প্রতিবাদ: পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত এক ব্যক্তির কফিন নিয়ে বিক্ষোভ মৌলবাদীদের। রবিবার। ছবি: এএফপি।
এখনও জ্বলছে পাকিস্তান। রবিবারও ইসলামাবাদের রাস্তায় রাস্তায় মৌলবাদীদের সঙ্গে লড়াই হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর।
এ দিনও বিক্ষোভকারীরা পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে সড়ক এবং রেলপথ অবরোধ করেন। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে গাড়ি এবং মোটরবাইক। ইসলামাবাদে পুলিশকে লক্ষ করে এ দিনও পাথর ছোড়া হয়েছে। হামলা চালানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমের উপরেও। অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশও কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান ব্যবহার করেছে। গোটা পাকিস্তান জুড়ে এই সংঘর্ষে দু’পক্ষের ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন ২৫০ জনের বেশি। তাঁদের মধ্যে ৯৫ জন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন।
গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে পাকিস্তানের পঞ্জাব সরকার সোম এবং মঙ্গলবার সমস্ত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সৈয়দ রাজা আলি গিলানি বলেছেন, ‘‘আইন-শৃঙ্খলার যা পরিস্থিতি, বুধবারও যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে, সে নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বুধবার স্কুল খোলা হবে।’’
পাকিস্তানে আইন করে জনপ্রতিনিধিদের শপথবাক্যে বদল আনা হয়েছে। এই কারণে আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের পদত্যাগের দাবিতে দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসলামাবাদ এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেছিলেন কট্টরপন্থী মৌলবাদী সংগঠন তেহরিক ই খতম ই নবুওত, তেহরিক ই লাবাইক ইয়া রসুল আল্লাহ এবং সুন্নি তেহরিক পাকিস্তান-এর প্রায় ২,০০০ কর্মী-সমর্থক। শনিবার তাঁদের অবরোধ তুলতে অভিযানে নামে পুলিশ ও আধাসেনা। শুরু হয় দু’পক্ষের সংঘর্ষ। হিংসা ছড়িয়ে পড়ে লাহৌর, রাওয়ালপিন্ডি, করাচি-সহ পাকিস্তানের অন্যান্য শহরেও। পাকিস্তানের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরি নিসার আলি খানের বাড়িতে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। মারধর করা হয় ক্ষমতাসীন পিএমএল-নওয়াজের এক জনপ্রতিনিধিও। হিংসা ছড়িয়ে পড়া আটকাতে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া এবং খবরের চ্যানেল। অবরোধকারীদের হটাতে কাবু করতে রাতে ইসলামাবাদে নামানো হয় সেনাও। কিন্তু রবিবারও দু’পক্ষের সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি।
এই গোটা ঘটনার পিছনে আবার দিল্লির হাত দেখছে পাকিস্তান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহসান ইকবালের অভিযোগ, এই কট্টরপন্থী মৌলবাদী সংগঠনগুলির সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ রয়েছে। তবে গোটা ঘটনার জন্য পাক সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে ইমরান খানের দল তেহরিক ই ইনসাফ।