‘দূরে থাকো’, বার্তা আমেরিকাকে
Iran

ইজ়রায়েল আক্রমণে তৈরি, হুঙ্কার ইরানের

দিন কয়েক আগে সিরিয়ার দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মৃত্যু হয় সাত জনের, যাঁদের মধ্যে ছিলেন ইরানের সামরিক বাহিনীর দুই জেনারেল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

এ বার সরাসরি ইজ়রায়েল আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিল তেহরান। শুধু তা-ই নয়, এই দ্বন্দ্বের থেকে ইজ়রায়েলের বন্ধু দেশ আমেরিকাকে দূরে সরে থাকার বার্তাও দিয়ে রেখেছে ইরান সরকার।

Advertisement

দিন কয়েক আগে সিরিয়ার দামাস্কাসে ইরানি দূতাবাসে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মৃত্যু হয় সাত জনের, যাঁদের মধ্যে ছিলেন ইরানের সামরিক বাহিনীর দুই জেনারেল। ক্ষুব্ধ ইরান তখনই ইজ়রায়েলকে ‘পাল্টা থাপ্পড়’ মারার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। এ বার ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসির রাজনীতি বিষয়ক ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মহম্মদ জামশিদির দাবি, তাঁদের তরফে ওয়াশিংটনকে বার্তা পাঠানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, ইজ়রায়েলকে যথাযথ জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। আর নিজেদের প্রতিষ্ঠানের উপরে হামলা এড়াতে এ সবের থেকে যেন দূরে থাকে ওয়াশিংটন। সমাজমাধ্যমে জামশিদি আরও দাবি করেছেন, জো বাইডেন প্রশাসন তাঁদের অনুরোধ করেছে, আমেরিকান সেনা বা নাগরিকদের উপরে যেন হামলা না হয়। আমেরিকাকে দেওয়া বার্তায় ইরান বলেছে, ‘নেতানিয়াহুর পাতা ফাঁদে নিজেদের জড়িও না’।

ইরানের এই লিখিত বার্তা ও তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেনি হোয়াইট হাউস। তবে বাইডেন প্রশাসনেরই এক আধিকারিক কয়েকটি আমেরিকান সংবাদমাধ্যমকে জানান, ইরানের তরফে সম্ভাব্য হামলার কথা জানার পর পরই ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করেছিলেন বাইডেন। আমেরিকার তরফে সর্বতোভাবে ইজ়রায়েলের মানুষের পাশে থাকার বার্তাও দেওয়া হয়। তেহরান সরাসরি পরমাণু হামলার ভয় না দেখালেও ওয়াশিংটন সব দিক থেকে প্রস্তুত এবং সতর্ক থাকছে বলেও জানান ওই আমেরিকান আধিকারিক। সতর্কতা বাড়িয়েছে ইজ়রায়েলও। সেনার সব সদস্যের ছুটি বাতিল করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। চলছে আকশপথে কড়া নজরদারি। বাইডেন প্রশাসনের আশঙ্কা, সাধারণ মানুষকে বাদ দিয়ে মূলত ইজ়রায়েলের বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটি ও গোয়েন্দা বাহিনীকে নিশানা করতে চলেছে ইরান।

Advertisement

গত বছর অক্টোবরে গাজ়া ভূখণ্ডে ইজ়রায়েলি বাহিনী হামাস-বিরোধী অভিযান শুরুর পর থেকেই সিরিয়ায় ইরানের অজস্র ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েল। তবে গত মঙ্গলবার দামাস্কাসের হামলার আগে পর্যন্ত ইরানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক স্তরে আক্রমণ চালায়নি ইজ়রায়েল। আমেরিকার দাবি, ইরানকে তারা জানিয়েছে যে, দামাস্কাসের দূতাবাসে হামলার খবর আগাম আঁচ করতে পারেননি তাদের দেশের গোয়েন্দারা।

আমেরিকা এবং তার বন্ধু দেশগুলি লেবাননের হিজ়বুল্লা গোষ্ঠীকে নানা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দেওয়ার জন্য ইরানের দিকে বরাবর আঙুল তুলে এসেছে। ইজ়রায়েলের উপরে সম্ভাব্য হামলার প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছেন হিজ়বুল্লার প্রধান হাসান নাসরাল্লা-ও। এমনিতে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকেন এই হিজ়বুল্লা নেতা। এক বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, ইজ়রায়েলের উপরে ইরানি হামলার পরে গোটা এলাকার রাজনৈতিক চিত্রটাই বদলে যাবে। সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে যে কোনও যুদ্ধের জন্য হিজ়বুল্লা সব সময় প্রস্তুত।’’

এর মধ্যেই বিভিন্ন আমেরিকান সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, নেতানিয়াহু সরকারের সঙ্গে হামাস যাতে শীঘ্রই শান্তি চুক্তি করতে রাজি হয়, তা নিয়ে সচেষ্ট আমেরিকা। প্যালেস্টাইনে হামাস বাহিনীর হাতে এখনও বন্দি রয়েছেন ইজ়রায়েলের প্রচুর বাসিন্দা। বন্দি তালিকায় রয়েছেন আমেরিকার কয়েক জন নাগরিকও। বিষয়টি নিয়ে কাতার এবং মিশরকে অনুরোধ করেছে ওয়াশিংটন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন মিশরের প্রেসিডেন্ট এবং কাতারের আমিরকে চিঠি লিখেছেন। এই সপ্তাহান্তেই বন্দি মুক্তি নিয়ে সদর্থক কোনও সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে আশা করছে আমেরিকা। শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে মিশরের রাজধানী কায়রোয় এই সপ্তাহান্তেই বৈঠকে বসতে চলেছেন আমেরিকা, কাতার এবং মিশরের প্রতিনিধিরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement