Iran Hijab Row

আরও কড়া পদক্ষেপের হুমকি ইরান সরকারের

ইরান সরকার জানাচ্ছে, শুধুমাত্র তেহরান প্রদেশ থেকেই এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকার অবশ্য এই আন্দোলনকে দাঙ্গার নাম দিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তেহরান শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ০৭:৩০
Share:

ইব্রাহিম রাইসি। ছবি: রয়টার্স।

আরও এক বার কড়া হাতে দেশ জুড়ে চলতে থাকা বিক্ষোভ দমনের কথা জানাল ইরানের অতি রক্ষণশীল সরকার। দেশের বিচার বিভাগের তরফে এক বার্তায় আজ স্পষ্ট জানানো হয়েছে যে, বিক্ষোভ-আন্দোলন চলাকালীন সরকারের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধ সংগঠিত হলে, অভিযুক্তকে কঠোর পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হবে।

Advertisement

১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিদ্রোহের পরে এই প্রথম এত বড় রাজনৈতিক সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে ইরানের নেতৃত্ব। গত সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সরকার-বিরোধী হিজাব আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের লক্ষ লক্ষ সাধারণ নাগরিক, যার মধ্যে একটা বড় অংশ মহিলা ও পড়ুয়া। নিরাপত্তা বাহিনীর হুমকিকে উপেক্ষা করে গত রবিবার থেকে ফের উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে পরিস্থিতি। বিশেষ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুায়ারা নতুন করে আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। অশান্তি ছড়াচ্ছে উত্তর-পশ্চিম কুর্দিশ এলাকাতেও।

ইরান সরকার জানাচ্ছে, শুধুমাত্র তেহরান প্রদেশ থেকেই এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সরকার অবশ্য এই আন্দোলনকে দাঙ্গার নাম দিয়েছে। তাদের দাবি, বিক্ষোভ কর্মসূচির নামে গোটা দেশে রাষ্ট্র-বিরোধী তাণ্ডব চালাচ্ছে কয়েকশো দুষ্কৃতী। বিচার বিভাগের মুখপাত্র মাসুদ সেতাইয়েশি আজ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘দেশের অধিকাংশ নাগরিক এমনকি বিক্ষোভকারীরাও এই দাঙ্গাকে সমর্থন করছেন না। তাঁরা বিচার বিভাগের কাছে আর্জি জানিয়েছেন যে অবিলম্বে যেন এই সব দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়। আমরাই বা আর কত দিন এই ধরনের আচরণ সহ্য করব?’’

Advertisement

সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ইরান জুড়ে যে ধরপাকড় চলেছে তাতে গ্রেফতার করা হয়েছে দুই সাংবাদিককেও। তাঁদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। এঁদের মধ্যে এক জন হলেন নিলোফার হামেদি। পুলিশি অত্যাচারে নিহত কুর্দিশ তরুণী মাহশা আমিনির যে বড় কোনও ক্ষতি হয়েছে, তা তিনিই প্রথম প্রকাশ্যে এনেছিলেন। হাসপাতালে মাহশার বাবা-মা একে অপরকে জড়িয়ে রয়েছেন এমন একটি ছবিও প্রকাশ করেন নিলোফার। মাহশার মৃত্যুর পরেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইরান। অন্য সাংবাদিকের নাম এলাহে মহম্মদি। মাহশার শহর সাকেজ়ে তাঁর অন্ত্যেষ্টির খবর কভার করতে গিয়েছিলেন এলাহে। এই দু’জনই এখন কারাগারে বন্দি। খুব শীঘ্রই তাঁদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হবে বলে জানা যাচ্ছে।

একটি মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, গত প্রায় দু’মাস ধরে চলা বিক্ষোভ–আন্দোলনে অংশ নিয়ে গত শনিবার পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৩১৮ জন বিক্ষোভকারীর। যাদের মধ্যে নাবালকের সংখ্যা কমপক্ষে ৪৯। মানবাধিকার সংগঠনগুলির বক্তব্য, বেশির ভাগ নিহতেরই গলা, বুক বা ঘাড়ে বুলেটের ক্ষত ছিল। অর্থাৎ তাঁদের মেরে ফেলার জন্যই ইচ্ছাকৃত ভাবে শরীরের উপরের অংশে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। উল্টো দিকে সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, বিক্ষোভকারীদের হামলায় মারা গিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৬ জন সদস্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement